নগর ভবন বন্ধ করে আন্দোলন গায়ের জোরে চালাচ্ছে বিএনপি: আসিফ মাহমুদ সজীব

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনে বিএনপির চলমান আন্দোলনকে গায়ের জোরে পরিচালিত একপাক্ষিক কার্যক্রম বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। সোমবার বিকেলে ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি আন্দোলন বিষয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করেন এবং বিএনপির দাবিকে আইনি ও প্রক্রিয়াগত দৃষ্টিকোণ থেকে প্রশ্নবিদ্ধ বলে অভিহিত করেন।

আসিফ মাহমুদের ভাষ্য অনুযায়ী, হাইকোর্টের রায়কে উপেক্ষা করে নির্বাচন কমিশন ট্রাইবুনাল যে রায় দিয়েছে, তা অবৈধভাবে আর্জি সংশোধনের মাধ্যমে হয়েছে। কমিশন নিজে শুনানিতে অংশ নেয়নি, ফলে একতরফা রায় হয়েছে এবং আপিলও করা হয়নি। তদুপরি, আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত না নিয়েই রাত ১০টায় গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে, যা একটি স্পষ্ট প্রশাসনিক ব্যত্যয়। তিনি আরও জানান, মামলায় স্থানীয় সরকার বিভাগকে পক্ষ করা হয়নি এবং রায়েও বিভাগটির কোনো দায়িত্ব বা নির্দেশনার কথা বলা হয়নি।

শপথ গ্রহণে বিলম্ব হওয়ার মূল কারণ হিসেবে তিনি বিচারাধীন রিট পিটিশন, আইনি জটিলতা, এবং উচ্চ আদালতের রায় উপেক্ষা করার বিষয়গুলো তুলে ধরেন। বরিশাল সিটি করপোরেশনের অনুরূপ মামলার ভিত্তিতে ট্রাইবুনাল যেভাবে রায় খারিজ করেছে, তার সঙ্গে ঢাকার অবস্থান অমিল বলেও তিনি মন্তব্য করেন। ফলে মেয়র পদে মেয়াদ সম্পর্কেও বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে—কতদিন মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করা যাবে বা আদৌ মেয়াদ আছে কি না, তা স্পষ্ট নয়।

আসিফ মাহমুদ আরও বলেন, নির্বাচন কমিশনের পত্রে বলা হয়েছে, কোনো আইনি জটিলতা না থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে একাধিক আইনি জটিলতা বিদ্যমান। আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের জন্য অপেক্ষা করাও এই প্রক্রিয়ার অংশ। এমন অবস্থায় শপথ না দেওয়া অযৌক্তিক নয়।

তিনি ব্যক্তিগতভাবে ইশরাক হোসেনের পক্ষ থেকে আক্রমণাত্মক ও অপমানজনক কর্মকাণ্ডের কোনো যৌক্তিকতা খুঁজে পাননি বলে পোস্টে উল্লেখ করেন। তাঁর মতে, এটি সাধারণ জনগণের কর্মসূচি নয় বরং বিএনপি ও তাদের অঙ্গসংগঠনের নির্দেশনায় পরিকল্পিতভাবে পরিচালিত কর্মসূচি, যার তথ্য গোয়েন্দা সংস্থার কাছেও রয়েছে।

‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে ষষ্ঠ দিনের মতো নগর ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ইশরাকের সমর্থকরা। মূল ফটকে তালা লাগিয়ে তাঁরা দাবি করছেন, আসিফ মাহমুদের প্রভাবেই আদালতের রায় ও নির্বাচন কমিশনের গেজেট থাকার পরও ইশরাক শপথ নিতে পারছেন না। তবে আসিফ মাহমুদের দাবি, আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত শপথ গ্রহণ সম্ভব নয়, আর বিএনপির এই আন্দোলন জনসাধারণের দুর্ভোগ ও প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে।