হয়রানিমূলক রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারে সরকারের উদ্যোগ

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: সোমবার, ১৯ মে, ২০২৫, ৬:৩৩ অপরাহ্ণ
হয়রানিমূলক রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারে সরকারের উদ্যোগ

আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে বিএনপি-জামায়াতসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করা হয়। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত দায়ের হওয়া এসব হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মোট ১০ হাজার ৫০৬টি মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইন-১ শাখার কর্মকর্তারা জানান, প্রত্যেকটি মামলা সংশ্লিষ্ট জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর পত্র মারফত পাঠানো হয়েছে এবং জেলা পাবলিক প্রসিকিউটরকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এসব মামলার প্রত্যাহার ফৌজদারী কার্যবিধির ৪৯৪ ধারার আওতায় সম্পন্ন হচ্ছে। এ লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ দুটি কমিটি গঠন করেছে—একটি জেলা পর্যায়ে এবং অন্যটি মন্ত্রণালয় পর্যায়ে। জেলা পর্যায়ের কমিটির সভাপতি থাকবেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং সদস্য হিসেবে থাকবেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ সুপার এবং পাবলিক প্রসিকিউটর।

জেলা কমিটি মামলাগুলো পর্যালোচনা করে যদি মনে করে কোনো মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বা হয়রানির জন্য করা হয়েছে, তাহলে তা প্রত্যাহারের সুপারিশ করবে। এই সুপারিশ ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। পাশাপাশি ব্যক্তি পর্যায়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বা আইন মন্ত্রণালয়ের সলিসিটর বরাবর আবেদন করা যাচ্ছে, যেগুলো যাচাই-বাছাই করে মন্ত্রণালয়ের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।

মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এবং সদস্যসচিব হিসেবে আছেন জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব। এই কমিটি জেলা থেকে আসা সুপারিশ পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করে এবং মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ের মাধ্যমে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে চূড়ান্তভাবে জানানো হয়।

২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত দায়ের হওয়া যেকোনো রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলার ভুক্তভোগী এই সুযোগ গ্রহণ করতে পারবেন। তবে আবেদনকারীদের অবশ্যই মামলার এজাহার ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে চার্জশিটের সত্যায়িত অনুলিপি জমা দিতে হবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ফয়সল হাসান জানিয়েছেন, নির্দোষ ব্যক্তি ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের অপ্রয়োজনীয় হয়রানি থেকে মুক্তি দেওয়ার লক্ষ্যে এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া হিসেবে বাস্তবায়ন হচ্ছে।