আওয়ামী লীগকে ‘কুমির’ আখ্যা ও সতর্কবার্তা দিলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫, ৮:১৯ অপরাহ্ণ
আওয়ামী লীগকে ‘কুমির’ আখ্যা ও সতর্কবার্তা দিলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া আওয়ামী লীগকে ‘কুমির’ হিসেবে আখ্যায়িত করে একটি কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পাতায় দেওয়া সংক্ষিপ্ত বার্তায় তিনি বলেন, “বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, ‘উত্তর’ এবং ‘দিল্লি জোট’ভুক্ত হয়ে যে কুমির ডেকে আনছেন, তা আপনাদেরকেই খাবে।”

তবে ‘তুমি’ বলতে তিনি কাকে বোঝিয়েছেন বা ‘উত্তর’ ও ‘দিল্লি জোট’ শব্দের অর্থ কি, তা স্পষ্ট করেননি। একই পোস্টে ইংরেজিতে লিখেছেন, “You are not one of them — you were only temporarily brought into the fold.”

আসিফ মাহমুদ ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক এবং আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হন। ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট গঠিত ইউনূস সরকারের আওতায় তিনি প্রথমে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান, পরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ও তার অধীনে আসে।

ফেসবুক পোস্টে তিনি আরও বলেন, “আমাদের না আছে মরার ভয়, না হারানোর কিছু। একমাত্র আফসোস গণতান্ত্রিক রূপান্তর ও দেশের মানুষের ভাগ্য ইতিবাচক পথে যাচ্ছে না। স্বপ্ন দেখে স্বপ্নভঙ্গের কষ্টই বোধহয় এ দেশের ভাগ্য।”

সেদিন সন্ধ্যায় এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও যুগ্ম আহ্বায়ক নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে আসিফ মাহমুদ ও তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমও উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের গুঞ্জনের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এনসিপির নেতারা তাকে পদে থাকার অনুরোধ জানান।

অন্যদিকে, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের সমর্থকরা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগ দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ করেন। পরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “যে উপদেষ্টারা নতুন কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত, তাদের থাকার ফলে সরকারের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে, তাই তাদের অব্যাহতি হওয়া উচিত।”

এদিকে, আওয়ামী লীগকে নিয়ে আসিফ মাহমুদের এই সতর্কতার মধ্যেই দলটিকে অন্তর্বর্তী সরকারের এক নির্বাহী আদেশে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ১০ মে প্রকাশিত ওই আদেশে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার চলাকালীন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।

২০২৪ সালের জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত প্রাণহানির ঘটনার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অভিযোগ আনা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত হওয়ায় তারা পরবর্তী নির্বাচনে অংশগ্রহণের যোগ্যতা হারিয়েছে।

নির্বাচন সময় নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বিভিন্নবার বলেছেন, সীমিত সংস্কার হলে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে এবং বৃহৎ পরিসরে সংস্কার হলে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।

তবে সাম্প্রতিক এক সেনাবাহিনী সদর দফতর বৈঠকে সেনাপ্রধান জানিয়েছেন, তিনি ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারির মধ্যে একটি নির্বাচিত সরকার দেখতে চান—এরকম খবর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।