গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে একজোট ইরান-পাকিস্তান, তেহরানে যৌথ বার্তা

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: বুধবার, ২৮ মে, ২০২৫, ৫:১৪ অপরাহ্ণ
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে একজোট ইরান-পাকিস্তান, তেহরানে যৌথ বার্তা

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এবার একত্রিত অবস্থান নিয়েছে ইরান ও পাকিস্তান। তেহরানে আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির সঙ্গে বৈঠকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এ প্রতিশ্রুতি দেন বলে জানিয়েছে ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা ইরনা, যার বরাতে খবর প্রকাশ করেছে এএফপি।

বছরের শুরুতে ইরান পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে ‘সন্ত্রাসী আস্তানা’ লক্ষ্য করে হামলা চালালে দুই দেশের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয়। তখন কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার হুমকিও আসে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়ে ইরান শান্তি উদ্যোগে সক্রিয় ভূমিকা নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় শেহবাজ শরিফের সফরে দুই দেশের সম্পর্কে ‘নতুন সূচনার’ ইঙ্গিত মিলেছে।

তেহরানে প্রথমে ইরানি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে বসেন শেহবাজ। বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, পাকিস্তান ইরানের শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচিকে পূর্ণ সমর্থন জানাবে। পাশাপাশি সীমান্ত এলাকায় সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধে যৌথ পদক্ষেপের আহ্বান জানান তিনি।

শেহবাজ আরও বলেন, ইসলামাবাদ কখনোই তাদের ভূখণ্ডকে তেহরানের বিরুদ্ধে ব্যবহারের অনুমতি দেবে না। ইরানি প্রেসিডেন্টের মন্তব্যে উঠে আসে গাজায় চলমান গণহত্যা এবং পশ্চিমা বিশ্বের নীরবতা। তিনি বলেন, এই পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে পাকিস্তান ও ইরান একক কণ্ঠে কথা বলবে।

পরবর্তীতে সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির সঙ্গে বৈঠকে শেহবাজ বলেন, “পাকিস্তান মুসলিম বিশ্বের মধ্যে ইসরায়েলবিরোধী অবস্থানে অবিচল থেকেছে। গাজায় ৫৪ হাজার মানুষের নিহত হওয়া আন্তর্জাতিক মানবতার ওপর গভীর কলঙ্ক।”

জবাবে খামেনি জানান, “ইরান ও পাকিস্তান যৌথভাবে কাজ করলে গাজায় ইসরায়েলি অপরাধ বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব।” তিনি সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা, সীমান্ত নিরাপত্তা এবং ইকো (ECO) সংগঠনের কার্যক্রমে পারস্পরিক অংশগ্রহণ বাড়ানোর আহ্বান জানান।

এই সফর দুই দেশের কূটনৈতিক উত্তেজনা হ্রাস করে নতুনভাবে পারস্পরিক সম্পর্ক শক্তিশালী করার ইঙ্গিত দিলেও, এর আরও গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে—গাজায় চলমান সংকটে মুসলিম বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ দুটি দেশের ঐক্যবদ্ধ বার্তা, যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বড় তাৎপর্য বহন করে।