গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত অন্তত ৫৪, পুড়ে ছাই শিশুদের দেহ

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের পৃথক দুটি বিমান হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫৪ জন ফিলিস্তিনি। নিহতদের মধ্যে বহু শিশু রয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে নিশ্চিত করেছে বিবিসি।
প্রথম হামলাটি চালানো হয় গাজা সিটির ফাহমি আল-জারগাওয়ি স্কুলে, যেখানে বেইত লাহিয়া থেকে বাস্তুচ্যুত শত শত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। আগুনে পুড়ে যায় স্কুলটির দুটি শ্রেণিকক্ষ। ভেতরে থাকা কমপক্ষে ২০ জনের মৃত্যু হয়, যাদের অধিকাংশই শিশু ও নারী। গাজার সিভিল ডিফেন্স বাহিনী জানিয়েছে, অনেক মরদেহ এতটাই দগ্ধ হয়েছিল যে তাদের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। প্রত্যক্ষদর্শীরা ভয়াবহতার বর্ণনা দিয়ে বলেন, চারপাশে আগুন, ধোঁয়া আর পোড়া মানুষের শরীর পড়ে ছিল।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) দাবি করেছে, স্কুল ভবনটিতে হামাস ও ইসলামিক জিহাদের একটি কমান্ড সেন্টার ছিল এবং তারা সেখান থেকে ইসরায়েলি নাগরিক ও সেনাদের ওপর হামলার পরিকল্পনা করছিল। একই সঙ্গে তারা হামাসের বিরুদ্ধে সাধারণ ফিলিস্তিনিদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগও তোলে।
দ্বিতীয় হামলাটি চালানো হয় গাজার জাবালিয়ায় একটি বাড়িতে, যেখানে অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন। এই হামলার বিষয়ে এখনও পর্যন্ত ইসরায়েল কোনো মন্তব্য করেনি।
এই দুই হামলা গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক তীব্র সামরিক অভিযানের অংশ। আইডিএফ জানিয়েছে, গত ৪৮ ঘণ্টায় গাজাজুড়ে তারা ২০০টির বেশি স্থানে হামলা চালিয়েছে।
এর আগে শুক্রবার, গাজায় এক নারী চিকিৎসকের বাড়িতে চালানো ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয় তার নয় সন্তান। তাদের বয়স কয়েক মাস থেকে শুরু করে ১২ বছর পর্যন্ত। আহত হয় চিকিৎসকের স্বামী ও একমাত্র জীবিত সন্তান।
শনিবার খান ইউনিসে বিমান হামলায় নিহত হন আন্তর্জাতিক রেড ক্রসের দুই ফিলিস্তিনি কর্মী—ইব্রাহিম ঈদ ও আহমাদ আবু হিলাল।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫৩ হাজার ৯৩৯ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ২২ হাজার ৭৯৭ জন। তবে সরকারি গণমাধ্যমের দাবি, নিহতের প্রকৃত সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়ে গেছে। কারণ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে থাকা বহু মানুষকে জীবিত উদ্ধারের আর কোনো সম্ভাবনা নেই বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন