গাজায় ইসরায়েলি বোমা হামলায় নিহত ১৯, নিহতদের মধ্যে শিশু, সাংবাদিক ও আন্তর্জাতিক কর্মী

অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বাহিনী আবারও ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে। সোমবার এক স্কুলে বোমা হামলায় অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আল জাজিরার বরাতে জানা গেছে, এই স্কুলটি আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল যেখানে বহু বেসামরিক ব্যক্তি, বিশেষ করে নারী ও শিশু আশ্রয় নিয়েছিলেন।
নিহতদের মধ্যে রয়েছেন দুজন আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কর্মী, একজন সাংবাদিক এবং কমপক্ষে কয়েকজন শিশু। নিহতদের মধ্যে ছিলেন গাজার ১১ বছর বয়সী কনিষ্ঠ সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার ইয়াকিন হাম্মাদ, যিনি গাজার বাস্তবতা সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরার মাধ্যমে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতেন।
একই সময়, গাজার চিকিৎসক ডা. আলা আমির আল-নাজ্জারের ১০ সন্তানের মধ্যে ৯ জনেরও মৃত্যু হয়েছে। তার একমাত্র বেঁচে থাকা সন্তান, ১১ বছর বয়সী আদম, বর্তমানে আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে।
গত এক সপ্তাহে ইসরায়েলের টানা বোমাবর্ষণ ও স্থল অভিযানে প্রায় ৬০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। দেইর আল-বালাহ শহরের এক আশ্রয়কেন্দ্রে মা ও তার সন্তানদের মৃত্যু ঘটেছে। Khan Yunis এর বানি সুহেইলায় ড্রোন হামলায় এক শিশুরও প্রাণহানি ঘটেছে। জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে আরেক হামলায় অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই নারী ও এক শিশু রয়েছেন।
এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি সতর্ক করেছে, গাজায় ৭০ হাজারেরও বেশি শিশু মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে এবং হাজার হাজার শিশু মৃত্যু ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। গত রোববার চার বছর বয়সী মোহাম্মদ ইয়াসিন অনাহারে মারা গেছেন।
ইদিকে স্পেনে মাদ্রিদে ইউরোপ ও আরব বিশ্বের ২০টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সম্মেলনের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্বে দুই-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন গড়ে তোলা।
ইসরায়েলের এই অব্যাহত আগ্রাসন ও বেসামরিক স্থাপনাগুলোর ওপর হামলা নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বেড়েই চলছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই কর্মকাণ্ডকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন