গাজায় ইসরায়েলি হামলায় সাংবাদিকসহ নিহত বেড়ে চলছে, সহায়তা কেন্দ্রেও প্রাণহানির ঘটনা

গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলি হামলায় সাংবাদিক ওসামা আল-আরবিদের বাড়িতে কমপক্ষে আটজন নিহত হয়েছেন। একইসঙ্গে ভোর থেকে এখন পর্যন্ত গাজা উপত্যকাজুড়ে আরও অন্তত ১৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) পরিচালিত একটি বিতর্কিত সহায়তা কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে আসা মানুষের ওপর ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন তিনজন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন অন্তত ৪৬ জন। এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
এর আগে, মার্কিন ও ইসরায়েল সমর্থিত একটি বিতর্কিত গোষ্ঠীর নতুন ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র চালু হলে হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে সেখানে ভিড় করতে দেখা যায়। রাফাহ শহরের ওই জিএইচএফ কম্পাউন্ডে প্রথম দিনেই বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, লোকজন কাঁটাতারের বেড়া ও মাটির বাঁধ পেরিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে, ত্রাণ কর্মীরা পিছু হটতে বাধ্য হন। ইসরায়েলি বাহিনী জানায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তাদের ফাঁকা গুলিও ছুঁড়তে হয়েছে।
জাতিসংঘকে উপেক্ষা করে জিএইচএফ নামের এই সংস্থাটি মার্কিন সশস্ত্র নিরাপত্তাকর্মী বা ঠিকাদারদের ব্যবহার করে গাজায় ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চালানোর চেষ্টা করছে, যা আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। ইসরায়েলি অবরোধের কারণে গাজায় ইতিমধ্যেই ভয়াবহ মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে এবং বিশেষজ্ঞরা সেখানে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। যদিও বর্তমানে কিছুটা অবরোধ শিথিল হয়েছে, তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
জাতিসংঘ গাজায় ত্রাণ বিতরণের এসব ভিডিওকে ‘হৃদয় বিদারক’ বলে মন্তব্য করেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, তারা ২১ লাখ মানুষের জন্য যথাযথ ত্রাণ সরবরাহের একটি সমন্বিত পরিকল্পনা তৈরি করে রেখেছে। তারা সতর্ক করে দিয়েছে, যদি মানবিক নীতি না মানা হয়, তবে আরও প্রাণহানির ঝুঁকি বাড়বে।
গাজায় ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৫৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, নিহত হয়েছেন মোট ৫৪ হাজার ৫৬ জন এবং আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ২৩ হাজার ১২৯ জন মানুষ। এই ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যেও আন্তর্জাতিক সহায়তা কার্যক্রমে বিশৃঙ্খলা এবং সংঘাত পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।
আপনার মতামত লিখুন