ঢাবি শিক্ষার্থী সাম্য হত্যা: সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মাদক চক্রের ছুরিকাঘাতে মৃত্যু, গ্রেপ্তার ১১

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মাদক কারবারিদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে খুন হন। ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী জানান, সাম্য ‘ট্রেজার গান’ (এক ধরনের ইলেকট্রিক শক দেওয়ার যন্ত্র) দেখতে চাওয়ায় তার সঙ্গে জড়িতদের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। এই ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে মাদক কারবারিদের একজন, রাব্বী, সাম্যকে সুইস গিয়ারের ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে।
এ ঘটনায় পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে তিনজনকে আহত অবস্থায় গ্রেপ্তার করে। পরবর্তীতে গোয়েন্দা তদন্তে আরও আটজনকে কক্সবাজার, মুন্সীগঞ্জ ও ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছে রাব্বী, মেহেদী, পাভেল, রিপন, সোহাগ, রবিন, হৃদয় এবং সুজন সরদার। ঘটনার পর শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করা হয় এবং পরে তা ডিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ঘটনার দিন রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে সাম্য ও তার দুই বন্ধু মোটরসাইকেল নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যান। সেখানকার একটি ফুডকোর্টে খাবার খেতে গেলে তারা ট্রেজার গানটি দেখতে পান। সাম্য সেটি কী জানতে চাইলে উত্তেজনা ছড়ায় এবং ছুরিকাঘাতে সে নিহত হয়।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তিনটি মাদক কারবারি গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত আটজনই ‘মেহেদী গ্রুপ’ নামে একটি চক্রের সদস্য, যার নেতৃত্বে রয়েছে মেহেদী। ঘটনার দিন মেহেদী একটি কালো ব্যাগে করে সুইস গিয়ার ছুরি নিয়ে এসে দলীয় সদস্যদের মধ্যে বিতরণ করে। এই ছুরিগুলোর একটি দিয়েই সাম্যকে হত্যা করা হয়। পরে মেহেদীর দেখানো স্থান থেকে মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায় দুটি সুইস গিয়ার ছুরি উদ্ধার করা হয়।
তদন্ত চলমান রয়েছে এবং মূল আসামিদের রিমান্ডে এনে হত্যাকাণ্ডের পেছনের উদ্দেশ্য বা মোটিভ খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে। গ্রেপ্তার হওয়া দুজন ইতিমধ্যে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পুলিশের মতে, মাদক কারবারের সঙ্গে অস্ত্র থাকা সাধারণ ব্যাপার, কারণ এসব স্থানে বড় অঙ্কের অর্থের লেনদেন হয়, যা অস্ত্রের প্রয়োজনীয়তা তৈরি করে।
আপনার মতামত লিখুন