ময়মনসিংহে বোরো ধান ও চাল সংগ্রহ চলতি মৌসুমে সন্তোষজনক: খাদ্য উপদেষ্টার মন্তব্য

ময়মনসিংহ বিভাগের চলতি মৌসুমে বোরো ধান ও চাল সংগ্রহ সন্তোষজনক বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্য ও ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার। বুধবার ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনারের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন ও খাদ্য অধিদপ্তরের জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সভায় জানানো হয়, ময়মনসিংহ বিভাগে বোরো মৌসুমে ধান ও চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা যথাক্রমে ৪৭,৯৩৬ মেট্রিক টন ও ২ লাখ ২৫,৮২৭ মেট্রিক টন। ইতোমধ্যে ৪৬০টি মিলের সঙ্গে ২ লাখ ২৫,৬২৭ মেট্রিক টন চাল সরবরাহের চুক্তি হয়েছে, যার মধ্যে ৭৩ হাজার মেট্রিক টনেরও বেশি চাল সরবরাহ করা হয়েছে। এ বছর বিভাগে ৪৫ লাখ ৫৪ হাজার মেট্রিক টনেরও বেশি বোরোধান উৎপাদিত হয়েছে। সিএসডি ও এলএসডিসহ মোট খাদ্য গুদামের ধারণক্ষমতা ১ লাখ ৬৭ হাজার মেট্রিক টন বলে জানানো হয়। ধান সংগ্রহের জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের আশাবাদ প্রকাশ করা হয়।
খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেন, “দেশে এবার বোরোধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক হতে হবে। জেলা প্রশাসকদের ক্লোজ মনিটরিং নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও জানান, সারাদেশে বোরো মৌসুমে ধান ও চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ১৭.৫ লাখ টন নির্ধারণ করা হয়েছে, যার মধ্যে ৩.৫ লাখ টন ধান ও ১৪ লাখ টন সেদ্ধ চাল সংগ্রহ করা হবে। কৃষকদের মূল্য সহায়তা দিতে ধানের কেজিপ্রতি ৪ টাকা বাড়িয়ে ৩৬ টাকা এবং চালের কেজিপ্রতি ৪৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ সংগ্রহ অভিযান ২৪ এপ্রিল থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চলবে।
খাদ্য উপদেষ্টা আরও জানান, দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে খাদ্য ভর্তুকিতে বরাদ্দ ৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা করার পরিকল্পনা রয়েছে, যা চলতি অর্থবছরে ৮ হাজার ৫৯ কোটি টাকা ছিল। ওএমএস ও টিসিবির মাধ্যমে খাদ্য বিতরণ কর্মসূচিও সম্প্রসারিত হচ্ছে। পরবর্তী অর্থবছরে উপকারভোগী পরিবারের সংখ্যা ৫০ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৫৫ লাখ করার এবং প্রতিটি পরিবার মাসে ৩০ কেজি চাল ১৫ টাকা কেজি দরে পাবে। কর্মসূচির মেয়াদ পাঁচ মাস থেকে বাড়িয়ে ছয় মাস করার পরিকল্পনাও রয়েছে।
খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবুল হাছানাত হুমায়ুন কবীর বলেন, “চালের মজুদ সমস্যার দ্রুত সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন বিভাগীয় কমিশনার মো. মোখতার আহমেদ। তিনি সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকদের আরসি ফুড ও ডিসি ফুডদের সঙ্গে সমন্বয় করে ধান ও চাল সংগ্রহ নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন। সভায় খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ময়মনসিংহ বিভাগের জেলা প্রশাসকবৃন্দ, আরসি ফুড, ডিসি ফুড ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন