‘ক্রিকেট বাদে সবকিছুই হচ্ছে’—বিসিবির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে খোলামেলা তামিম

বাংলাদেশ ক্রিকেট এখন যতটা না খেলায়, তার চেয়ে বেশি আলোচনায় মাঠের বাইরের নানা ইস্যুতে। বিপিএলের বিতর্ক, বিসিবির অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা, আর সর্বশেষ সভাপতি পরিবর্তনের ঘটনায় আবারও নতুন করে আলোচনায় এসেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এমন এক পরিস্থিতিতে বিসিবিতে ক্রিকেট ছাড়া সবকিছুই বেশি হচ্ছে বলে মন্তব্য করলেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল।
ব্যক্তিগত কাজে বর্তমানে পাকিস্তানের লাহোরে অবস্থান করছেন তামিম, যেখানে বাংলাদেশ দল খেলছে পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ। প্রথম ম্যাচে হারার পর সিরিজ বাঁচানোর মিশনে মাঠে নামছে টাইগাররা। এ সময় লাহোরে কিছু বাংলাদেশি সাংবাদিকের মুখোমুখি হন তামিম। বিসিবির চলমান ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে নিজের খোলামেলা মত জানিয়ে দেন তিনি।
তামিম বলেন, “বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড, এটা কিন্তু ক্রিকেটের বোর্ড। অথচ এখানে ক্রিকেট বাদে সবকিছুই বেশি হচ্ছে। কে আসবে, কে যাবে, কে সভাপতি হবে—এসব তো সামান্য বিষয়। অথচ সেগুলো নিয়েই বেশি আলোচনা হচ্ছে। এর প্রভাবে মানুষের ক্রিকেটের প্রতি আগ্রহ কমে যাচ্ছে। আমি মনে করি, এখন যাঁরা আছেন বা যাঁরা আসবেন, তাঁদের ক্রিকেটটাকে নিয়ে ভাবা দরকার। কারণ, ক্রিকেট তার জৌলুস হারাচ্ছে।”
ক্রিকেটের বাইরে অপ্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে অতিরিক্ত আলোচনার পরিবর্তে খেলায় মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। তামিম বলেন, “এটা স্বীকার করতে হবে আমরা স্ট্রাগল করছি। জাতীয় দল হোক বা ঘরোয়া ক্রিকেট, সব জায়গায় আমরা সমস্যায় পড়ছি। এই বাস্তবতা মেনে নিয়ে কীভাবে ঘুরে দাঁড়ানো যায়, সেটা ভাবতে হবে। অথচ এখন ক্রিকেট বাদে সবকিছু হচ্ছে।”
তামিম আরও বলেন, “আজ বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচ চলছে, অথচ মাত্র চারজন বাংলাদেশি সাংবাদিক এখানে এসেছে। এমন দৃশ্য তো আগে কখনও দেখিনি। যে দলই হোক না কেন—পাকিস্তান, আয়ারল্যান্ড বা জিম্বাবুয়ে—এতটা আগ্রহহীনতা অস্বাভাবিক। এটা পরিষ্কার বার্তা যে মানুষের আগ্রহ হারাচ্ছে ক্রিকেট।”
এই বিপর্যস্ত পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন তামিম। তাঁর মতে, “এটা এক-দুই বছরে সম্ভব নয়। অনেকে ভাবেন, নতুন কেউ এলেই রাতারাতি পরিবর্তন হবে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। পরিবর্তনের জন্য মনোভাবই আসল। ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে হলে বাস্তবভিত্তিক, স্থায়ী পরিকল্পনা দরকার।”
সব মিলিয়ে তামিম ইকবালের বক্তব্যে ফুটে উঠেছে এক সাবেক অধিনায়কের গভীর হতাশা, কিন্তু একই সঙ্গে আশার আলোও—যদি সবাই আন্তরিকভাবে ক্রিকেটের উন্নয়নে কাজ করে।
আপনার মতামত লিখুন