বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের শহীদ জিয়ার ৪৪তম শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে বাণী

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধারে ছাত্র-জনতা ও গণতন্ত্রকামী মানুষের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটেছে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎবার্ষিকীতে দলীয়ভাবে প্রকাশিত বাণীতে তিনি এসব কথা উল্লেখ করেন। বাণীটি স্বাক্ষর করেছেন দলের সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু।
ফখরুল বলেন, “ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বিজয়কে পূর্ণাঙ্গ করতে হবে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, জবাবদিহিমূলক সরকার, স্বচ্ছতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে একটি টেকসই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।”
তিনি শহীদ জিয়াকে স্মরণ করে বলেন, “মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক এবং ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ’ দর্শনের জনক শহীদ জিয়াউর রহমান আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার। তাঁর আদর্শ, কর্মসূচি ও নেতৃত্ব জাতীয় স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ভিত্তি গড়ে দিয়েছে।”
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে জিয়ার কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা জাতিকে উজ্জীবিত করেছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, “রাজনৈতিক দ্বিধা ও সিদ্ধান্তহীনতার সময় তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন, যার ফলে ছাত্র, যুবক, শ্রমিকসহ সাধারণ মানুষ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে দেশকে বিজয়ের পথে এগিয়ে নিয়ে যায়।”
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে একদলীয় শাসন, বাকস্বাধীনতা ও সংবাদপত্র দমন-নিষেধের বিরুদ্ধে সিপাহী-জনতার সমর্থনে জিয়াউর রহমান দৃঢ় পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তিনি রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে বহুদলীয় গণতন্ত্র, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে আনেন।
ফখরুল বলেন, “শহীদ জিয়া উৎপাদনের রাজনীতি শুরু করে বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তোলেন এবং দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন। তাঁর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার দেশকে মজবুত ভিত্তিতে দাঁড় করিয়েছে।”
তিনি অভিযোগ করেন, “দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামের সার্কিট হাউসে শহীদ জিয়াকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তবে ইতিহাস থেকে তাঁকে মুছে ফেলা যায়নি, তিনি চিরকাল জনগণের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন।”
আওয়ামী লীগের শাসনামলের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “গত ১৬ বছর ধরে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ জনগণের মৌলিক অধিকার হরণ করেছে, ভয়-আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করে ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করেছে। দেশের সম্পদ মাফিয়া অর্থনীতির মাধ্যমে লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে।”
তিনি যোগ করেন, “এই পরিস্থিতিতে গত বছর ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতাসহ গণতন্ত্রকামী মানুষের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে শেখ হাসিনার পতন ঘটেছে। এই বিজয়কে টেকসই করতে আইনের শাসন ও মানুষের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা জরুরি।”
বাণীর শেষে মির্জা ফখরুল দলীয় নেতাকর্মী, সমর্থক ও জনগণকে শহীদ জিয়ার শাহাদাৎবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ জিয়ার আদর্শ, সততা ও দেশপ্রেম জাতীয়তাবাদী শক্তির উৎস। জাতীয় স্বার্থ, গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার রক্ষায় তাঁর পথ অনুসরণ করতে হবে।”
আপনার মতামত লিখুন