জুলাইয়ে ঘোষিত হতে পারে জাতীয় সনদ: বদিউল আলম মজুমদার

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: শনিবার, ৩১ মে, ২০২৫, ২:১৮ অপরাহ্ণ
জুলাইয়ে ঘোষিত হতে পারে জাতীয় সনদ: বদিউল আলম মজুমদার

জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি জাতীয় সনদ আগামী জুলাই মাসে ঘোষণা করা হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য এবং সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। তবে তিনি এটিকে তার ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষা বলে উল্লেখ করেছেন, কোনো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নয়।

শনিবার (৩১ মে) দুপুরে রংপুর আরডিআরএস মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘জাতীয় সনদ ও নাগরিক প্রত্যাশা’ শীর্ষক নাগরিক সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। সংলাপের আয়োজন করে সুজনের রংপুর মহানগর কমিটি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মহানগর সভাপতি খন্দকার খায়রুল আনাম।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, “আগামী কয়েক দিনের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফা মতবিনিময় শুরু হবে। আশা করছি, এবার আমরা একটি ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারব এবং তার ভিত্তিতেই জাতীয় সনদ হবে, যাতে সবাই স্বাক্ষর করবে।”

তিনি বলেন, “আমার আকাঙ্ক্ষা, যেদিন আবু সাঈদ প্রাণ দিয়েছিলেন, যাঁর আত্মত্যাগে বাংলাদেশ জেগে উঠেছিল, সেই দিনেই যদি এই সনদ ঘোষিত হয়, তাহলে আমরা জাতি হিসেবে তাঁদের রক্তের ঋণ কিছুটা হলেও শোধ করতে পারব।”

একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান হলে ঝুঁকি

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, একই ব্যক্তি যখন প্রধানমন্ত্রী, সংসদ নেতা ও দলীয় প্রধান হন, তখন ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ ঘটে, যা গণতন্ত্রের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নিজের সিদ্ধান্তেই রাষ্ট্র পরিচালনা করতে পারেন। এমন পরিস্থিতি স্বৈরতন্ত্রের জন্ম দেয়।”

তিনি আরও বলেন, “একই ব্যক্তি যদি নির্বাহী বিভাগ ও আইনসভার শীর্ষে থাকেন, তাহলে ক্ষমতার বিভাজনের মূলনীতিই লঙ্ঘিত হয়। অতীতে আমরা এ পরিস্থিতির ভয়াবহ ফল দেখেছি।”

‘জুলাই প্রক্লেমেশন’ ও ‘জাতীয় সনদ’ আলাদা

জুলাই প্রক্লেমেশন ও জাতীয় সনদ এক নয় বলেও জানান সুজন সম্পাদক। তাঁর মতে, “জুলাই প্রক্লেমেশন একটি ঐতিহাসিক ঘোষণা; এটি গত জুলাইয়ের আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরবে। অন্যদিকে, জাতীয় সনদ হবে একগুচ্ছ প্রস্তাব, যা রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মতিতে তৈরি হবে এবং বাস্তবায়নের রূপরেখা নির্ধারিত হবে।”

সংবিধান সংশোধন ছাড়াই কিছু সংস্কার সম্ভব

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, কিছু রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সংস্কার রয়েছে যা করতে সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন নেই। সেসব সংস্কার দ্রুত শুরু করা গেলে, আগাম নির্বাচনের পথ সুগম হতে পারে। তিনি বলেন, “প্রার্থীতালিকা নির্ধারণের প্রক্রিয়া, দলীয় সিদ্ধান্তে স্বচ্ছতা—এসব সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলো এখনই শুরু করতে পারে।”

জাতীয় সনদ ঘিরে বাড়তে থাকা রাজনৈতিক আলোচনা নতুন করে নির্বাচনের সম্ভাবনার দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।