ইসলামাবাদে টিকটক তারকা সানা ইউসুফ হত্যাকাণ্ড: পাকিস্তানে টিনএজ কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ

পাকিস্তানের জনপ্রিয় টিকটক তারকা সানা ইউসুফ (১৭) ইসলামাবাদের নিজ বাসভবনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। সোমবার (২ জুন) রাতে সেক্টর জি-১৩ এলাকায় ঘটে যাওয়া এই নির্মম হত্যাকাণ্ড দেশজুড়ে শোক ও ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি অতিথি সেজে তার বাসায় প্রবেশ করে খুব কাছ থেকে গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায় বলে জানিয়েছে পুলিশ। এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।
খাইবার পাখতুনখোয়ার চিত্রাল এলাকার বাসিন্দা সানা অল্প সময়েই টিকটকে বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট তৈরি করে প্রচুর জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তার সামাজিক মাধ্যমে লক্ষাধিক অনুসারী ছিল। ঘটনার পর সানা ইউসুফের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস (পিমস)-এ পাঠানো হয়েছে। তবে এখনো হত্যার কারণ স্পষ্ট নয় এবং মামলা দায়ের কিংবা কোনো অভিযুক্তের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
টিনএজ টিকটকারদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন
সানা ইউসুফের মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে ব্যাপক আলোচনা। অনেকেই কিশোর-কিশোরী কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন। বিশেষ করে নারী টিকটকারদের লক্ষ্য করে সহিংসতার প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ বেড়েছে।
এর আগেও এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে। চলতি বছরের শুরুতে কোয়েটা শহরে ১৫ বছর বয়সী হিরা নামের এক কিশোরীকে টিকটক ব্যবহার করায় তার বাবা ও মামা মিলে হত্যা করেন। তারা গ্রেপ্তার হয়ে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন।
নতুন প্রজন্মের কণ্ঠরোধের শঙ্কা
সানা ইউসুফের মতো তরুণদের হঠাৎ উদীয়মান জনপ্রিয়তা অনেক সময়ই সমাজের রক্ষণশীল অংশে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। বিশেষ করে নারী কনটেন্ট নির্মাতাদের ক্ষেত্রে তা সহিংসতায় রূপ নিতে পারে। এসব ঘটনা নতুন প্রজন্মের আত্মপ্রকাশ ও কণ্ঠরোধের আশঙ্কা তৈরি করছে বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
এ ঘটনায় ইসলামাবাদ পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলছে এবং অপরাধীর খোঁজে অভিযান চালানো হচ্ছে। তবে সমাজে দিন দিন বাড়তে থাকা কিশোর কনটেন্ট নির্মাতাদের প্রতি হুমকি মোকাবেলায় আরও কঠোর নিরাপত্তা ও আইনগত সুরক্ষা জরুরি হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন অনেকেই।
আপনার মতামত লিখুন