ঈদুল আজহা সামনে, ফেনীর হাটগুলোতে জমে উঠেছে কোরবানির প্রস্তুতি

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: বুধবার, ৪ জুন, ২০২৫, ৬:০৯ অপরাহ্ণ
ঈদুল আজহা সামনে, ফেনীর হাটগুলোতে জমে উঠেছে কোরবানির প্রস্তুতি

পবিত্র ঈদুল আজহা আর মাত্র তিন দিন পর। ঈদ ঘনিয়ে আসায় ফেনীর বিভিন্ন এলাকায় কোরবানির পশুর হাটে ক্রমেই বাড়ছে ভিড়। শুরুতে হাটগুলোতে ক্রেতার উপস্থিতি কম থাকলেও মঙ্গলবার দিনভর হাটে ছিল উপচে পড়া জনসমাগম। ক্রেতা-বিক্রেতাদের ব্যস্ততায় জমজমাট হয়ে উঠেছে জেলার পশুর হাটগুলো।

পশুর হাটে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। মঙ্গলবার জেলার বিভিন্ন হাট পরিদর্শন করেছেন ফেনীর পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান। তিনি জানান, প্রতিটি হাটে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। চাঁদাবাজি, হয়রানি ও প্রতারণা রোধে নেওয়া হয়েছে কঠোর নজরদারি। হাটে জাল টাকা শনাক্তে মেশিনও রাখা হয়েছে। গরু কেনাবেচায় কোনো সমস্যা হলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

জেলার বিভিন্ন পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, এবার দেশীয় গরুর সরবরাহ তুলনামূলকভাবে বেশি। অনেক ক্রেতাই ইতোমধ্যে পছন্দের পশু কিনে নিয়েছেন। তবে পশুর দাম নিয়ে রয়েছে ভিন্নমত। ফুলগাজীর মুন্সীরহাট বাজারে অনেক ক্রেতা অভিযোগ করেছেন, গরু ও ছাগলের দাম অনেক বেশি হাঁকা হচ্ছে। ফলে অনেকেই হতাশ হয়ে হাট থেকে খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন।

কোরবানির জন্য গরু কিনতে আসা একাধিক ক্রেতা জানিয়েছেন, হাটে পশুর সরবরাহ থাকলেও দাম তুলনামূলকভাবে বেশি। একজন ক্রেতা বলেন, “গত কয়েক দিন ধরে জেলার কয়েকটি হাট ঘুরে দেখেছি, কিন্তু এখনও পছন্দমতো দামে ছাগল পাইনি। হাটে প্রকৃত খামারির চেয়ে ব্যাপারীর সংখ্যাই বেশি।” অন্যদিকে, এক গরু ব্যবসায়ী জানান, “আমরা যে দামে গরু কিনেছি, ক্রেতারা তার চেয়ে কম দাম দিতে চাইছেন। গরুর ওজন ও গুণমান অনুযায়ী দাম বেশি নয়, তারপরও বিক্রি কম হচ্ছে।” তার ভাষ্যে, মাঝারি আকৃতির দেশীয় গরুর চাহিদা সবচেয়ে বেশি।

এক ছাগল বিক্রেতা জানান, আবহাওয়ার কারণে হাটে ক্রেতা কম ছিল। তিনি চারটি ছাগল এনেছিলেন, এর মধ্যে দুটি বিক্রি হয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে তিনি হাট ত্যাগ করছেন বলে জানান।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মোজ্জাম্মেল হক জানান, প্রতিটি হাটে পশু স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য মেডিকেল টিম কাজ করছে। বিক্রেতাদের প্রাকৃতিক খাদ্যে গরু পালনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এবং হরমোন বা কেমিক্যাল ব্যবহারে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। তার মতে, এবার হাটে দেশি গরুর সংখ্যাই বেশি দেখা যাচ্ছে।

সব মিলিয়ে ঈদুল আজহা উপলক্ষে ফেনীর পশুর হাটগুলোতে জমে উঠেছে কেনাবেচা। তবে দাম নিয়ে কিছুটা হতাশা থাকলেও উৎসবের আনন্দে পশু কেনার আগ্রহ রয়েছে সবার মধ্যে। নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যসেবার প্রস্তুতি থাকায় ক্রেতা-বিক্রেতারা স্বস্তিতে কেনাবেচা করতে পারছেন।