শিল্পনগরী খুলনায় গ্রীষ্ম মৌসুমে তীব্র সুপেয় পানির সংকট

শিল্পনগরী খুলনায় গ্রীষ্ম মৌসুমে সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। গত এক দশকে নগরীর ১৪টি ওয়ার্ডে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ১.৯৮ থেকে ৪.৪ মিটার নিচে নেমে গেছে, যার ফলে অনেক টিউবওয়েল ও গভীর নলকূপ বন্ধ হয়ে পড়েছে। বর্তমানে নগরবাসী মূলত ট্যাংকির পানি বা বোতলজাত পানির ওপর নির্ভরশীল, যা নিম্নআয়ের মানুষের নাগালের বাইরে রয়েছে।
নগরীর শ্মশান ঘাট এলাকার বাসিন্দা চম্পা বলেন, “অনেক দূর থেকে পানি আনতে হয়, গোসলও ঠিকমতো করা যায় না।” আরেক বাসিন্দা দেলোয়ার জানান, “আগে টিউবওয়েল থেকে সহজে পানি পাওয়া যেত, এখন বাড়ি বাড়ি গিয়ে পানি চাইতে হয়।”
খুলনা ওয়াসার তথ্য মতে, তারা দৈনিক গড়ে মাত্র ৮ কোটি ৫০ লাখ লিটার পানি সরবরাহ করতে পারছে, অথচ নগরীর ১৫ লক্ষাধিক বাসিন্দার জন্য প্রয়োজন ২৪ কোটি লিটার। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ১৫ কোটি ৫০ লাখ লিটার পানির ঘাটতি রয়েছে। এছাড়া সরবরাহকৃত পানির মান নিয়েও নগরবাসীর অভিযোগ রয়েছে।
রায়েরমহল এলাকার বাসিন্দা মিলন বলেন, “ওয়াসার পানি অনেক সময় নোংরা ও দুর্গন্ধযুক্ত থাকে। তা খাওয়ার যোগ্য নয়, গোসল করাও কষ্টকর।”
খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার জানান, “অপরিকল্পিতভাবে সাবমারসিবল পাম্প বসানো এবং অতিরিক্ত পানি উত্তোলনের কারণে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। টেকসই সমাধান ছাড়া এই সংকট নিরসন সম্ভব নয়।”
খুলনা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হুসাইন শওকত বলেন, “সমস্যা সমাধানে কাজ চলছে। পানির মান নিয়ে অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক টিম পাঠিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বর্তমানে ব্যবহৃত পাইপলাইন পুরনো ডিজাইনের, তাই নতুন প্রযুক্তি অনুযায়ী বড় ব্যাসার্ধের পাইপ বসানো হচ্ছে। এছাড়া ‘ফেইজ টু’ নামে একটি নতুন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, যা বাস্তবায়িত হলে প্রতিটি পরিবার নিরবচ্ছিন্ন সুপেয় পানি পাবে।”
আপনার মতামত লিখুন