গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ৭৫, দমবন্ধ করা পরিস্থিতি

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: রবিবার, ৮ জুন, ২০২৫, ৫:৪২ অপরাহ্ণ
গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ৭৫, দমবন্ধ করা পরিস্থিতি

মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশের মতো ৬ জুন ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ঈদুল আজহা পালিত হয়। এর পরের দিন, ৭ জুন ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর তাণ্ডবে গাজা উপত্যকায় অন্তত ৭৫ জন নিহত এবং প্রায় ১০০ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১৬ জন একই পরিবারের সদস্য, যার মধ্যে ৬ শিশু রয়েছে। এই পরিবারটি গাজার প্রধান শহর গাজা সিটির সাবরা এলাকায় বসবাস করত।

গাজার সিভিল ডিফেন্স বিভাগের মুখপাত্র মাহমুদ বাসেল আল জাজিরা জানান, বিমান হামলার আগে কোনো সতর্ক সংকেত বা সাইরেন দেওয়া হয়নি। ধ্বংসস্তূপের তলায় আটকা পড়া অন্তত ৮৫ জন এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তিনি এই হামলাকে ‘ঠান্ডা মাথায় গণহত্যা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং বলেন, নিহতরা সবাই বেসামরিক, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুরা রয়েছে।

গাজা সিটির বাসিন্দারা জানান, ঈদের সকাল সাধারণত পরিবার-পরিজন মিলিত হয়ে আনন্দে কাটাতেন, কিন্তু এবার তারা শিশু ও স্বজনদের লাশ বহন করছেন। একই সঙ্গে তারা ইসরায়েলের এই হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, হামলার লক্ষ্য ছিল হামাসের এক গুরুত্বপূর্ণ নেতা আসাদ আবু শারিয়া, যিনি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। ওই দিন গাজায় আরও গোলাবর্ষণে অন্তত ৪২ জন নিহত হন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হামলার জবাবে ইসরায়েলি বাহিনী অভিযান শুরু করে। এর ১৭ মাসে গাজায় ৫৪,৬৭৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ২৫,৫৩০ জন আহত হয়েছেন, যার অধিকাংশই নারী ও শিশু। একই সময়ে খাদ্য, পানি ও ওষুধের ঘাটতির কারণে গাজার মানুষের জীবনযাত্রা অতন্দ্রতা ও দুর্দশায় ডুবে গেছে।

২৫১ জন জিম্মির মধ্যে অন্তত ৩৫ জন এখনও জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে, যাদের উদ্ধার করতে অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছে আইডিএফ। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বারবার ইসরায়েলের সামরিক অভিযান বন্ধের আহ্বান জানিয়ে আসছে। আইসিজেতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা করা হয়েছে।

তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু স্পষ্ট করেছেন, হামাসকে সম্পূর্ণ দুর্বল করে জিম্মিদের মুক্ত না করা পর্যন্ত অভিযান চলবে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র গাজায় দু’মাসের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব দিয়েছে, যা নেতানিয়াহু সম্মতি দিয়েছেন, তবে হামাস তা অনুমোদন করেনি।