ঈদে কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল, জমে উঠেছে আনন্দ আর ব্যবসা

পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটিকে কেন্দ্র করে কক্সবাজারে নেমেছে পর্যটকের ঢল। ঈদের দ্বিতীয় দিন থেকেই ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্রসৈকতজুড়ে লাখো মানুষ ভিড় করছেন। কেউ সমুদ্রস্নানে ব্যস্ত, কেউ সূর্যাস্ত উপভোগ করছেন, আবার কেউ বিচ বাইক কিংবা ঘোড়ার পিঠে চড়ে উপভোগ করছেন ছুটির আনন্দ। রোববার সকাল থেকেই শহরের প্রবেশপথে দেখা যায় দীর্ঘ যানজট, যেখানে পর্যটকবাহী বাস, মাইক্রোবাস ও ব্যক্তিগত গাড়ির সারি লেগে আছে। মূল ভিড় লক্ষ্য করা গেছে লাবণী, সুগন্ধা ও কলাতলী সৈকতে, যেখানে প্রতিদিনই পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে।
এই ভিড়ে মুখে হাসি ফুটেছে হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীদের। প্রায় ৯৫ শতাংশ হোটেল ও রিসোর্ট ইতোমধ্যে পূর্ণ হয়ে গেছে। অনেকেই আগেভাগে কক্ষ বুক করলেও কেউ কেউ স্থানীয়ভাবে থাকার জায়গা খুঁজছেন। ফলে কক্সবাজারে জমে উঠেছে রেস্টুরেন্ট, দোকানপাট ও পরিবহনসহ সব ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য। ঈদ উপলক্ষে এখানে আসা পর্যটকের সংখ্যা ৫ থেকে ৬ লাখের মতো বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে জেলার অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে এবং কয়েকশ কোটি টাকার লেনদেনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসন, ট্যুরিস্ট পুলিশ, র্যাব ও স্বেচ্ছাসেবকদের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে বিশেষ নজরদারি টিম। সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে বসানো হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার এবং স্থাপন করা হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। মোবাইল টিমসহ সাদা পোশাকের সদস্যরাও টহলে রয়েছেন। নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি প্রশাসন পর্যটকদের যেন কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হন, তা নিশ্চিত করতে মোবাইল টিম নিয়োজিত করেছে।
ঢাকা থেকে আসা এক পর্যটক বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই কক্সবাজারে আসার পরিকল্পনা ছিল। ভিড় থাকলেও পরিবেশ উপভোগ্য ও নিরাপত্তা সন্তোষজনক। অন্য এক পর্যটক জানান, বন্ধুদের সঙ্গে ছুটি কাটাতে এসেছেন এবং সৈকতের সৌন্দর্য, খাবার ও মানুষের প্রাণবন্ত উপস্থিতিতে এক অনন্য অভিজ্ঞতা হচ্ছে। ঈদের এই উৎসবমুখর সময় কক্সবাজারের সৈকতে যে জনস্রোত দেখা যাচ্ছে, তা শুধু আনন্দের নয়—বরং দেশের পর্যটন শিল্পের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার কথাও নতুন করে সামনে এনেছে।
আপনার মতামত লিখুন