টিউলিপের সাক্ষাৎ অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করলেন ড. ইউনূস, বললেন ‘আইনি প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ নয়’

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: শনিবার, ১৪ জুন, ২০২৫, ১০:৩১ পূর্বাহ্ণ
টিউলিপের সাক্ষাৎ অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করলেন ড. ইউনূস, বললেন ‘আইনি প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ নয়’

লন্ডন সফরে থাকা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ব্রিটিশ লেবার এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের সাক্ষাৎ অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছেন। দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে আলোচনার প্রস্তাবে তিনি স্পষ্ট বলেন, এটি এখন আইনি প্রক্রিয়ার বিষয় এবং তিনি এতে হস্তক্ষেপ করতে চান না।

টিউলিপ সিদ্দিক—যিনি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি—এর আগে এক চিঠিতে ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ চেয়ে বলেন, “ঢাকায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মাধ্যমে সৃষ্ট ভুল বোঝাবুঝি দূর করতে” এই বৈঠক সহায়ক হতে পারে।

তবে বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ইউনূস সাফ জানিয়ে দেন, “না, করব না। কারণ এটা আইনি প্রক্রিয়া। আমি আইনি প্রক্রিয়ায় বাধা দিতে চাই না। প্রক্রিয়াটি চলতে থাকুক।”

তিনি আরও বলেন, আদালতই নির্ধারণ করবে—অভিযোগ টেকসই কিনা। একই সঙ্গে জানান, দুদকের ওপর তাঁর পূর্ণ আস্থা রয়েছে এবং সংস্থাটি সঠিক কাজই করছে।

অন্যদিকে, টিউলিপ বিবৃতিতে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, “কাল্পনিক অভিযোগের ভিত্তিতে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ছড়ানো হচ্ছে, আর অধ্যাপক ইউনূস সেই প্রতিহিংসার কেন্দ্রে রয়েছেন।” তিনি অনুরোধ করেন, ড. ইউনূস যেন সংবাদমাধ্যমে তাঁর বিরুদ্ধে অপবাদ দেওয়া বন্ধ করেন এবং আদালতকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার সুযোগ দেন।

টিউলিপ দাবি করেন, তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ এবং তারা তাঁর আইনজীবীদের সঙ্গেও কোনো যোগাযোগ করেনি।

প্রত্যর্পণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেন, “যদি এটি আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হয়, তবে অবশ্যই (প্রত্যর্পণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে)।”

এদিকে, প্রধান উপদেষ্টার যুক্তরাজ্য সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়নি। ড. ইউনূস একে ‘হাতছাড়া হওয়া সুযোগ’ বলে মন্তব্য করেন এবং বলেন, “আমি জানি না, আমার হতাশ হওয়া উচিত নাকি তাঁর।”

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সফরের মাধ্যমে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী চাইলে বাস্তব পরিস্থিতি উপলব্ধি করতে পারতেন। তবে কেন সাক্ষাৎ হয়নি, সে বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।

বিবিসি সূত্র জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক দুর্নীতি দমন সমন্বয় কেন্দ্র (আইএসিসিসি) শেখ হাসিনার শাসনামলে দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য বাংলাদেশকে সহায়তা করতে প্রস্তুত রয়েছে।

এই ঘটনাপ্রবাহের মাধ্যমে বাংলাদেশি রাজনীতির আন্তর্জাতিক মাত্রা নতুন করে আলোচনায় এসেছে, যেখানে ক্ষমতা, বিচার ও বিশ্বমঞ্চের অবস্থান পরস্পরকে ছায়ার মতো অনুসরণ করছে।