বিদেশে নির্বাচন নিয়ে বৈঠক গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী: নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বিদেশে নির্বাচন নিয়ে সরকার ও বিএনপির বৈঠককে গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী হিসেবে সমালোচনা করেছেন। শুক্রবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, “লন্ডনে বসে একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরকারের বৈঠক দেশের জনগণের স্বার্থ ও গণআকাঙ্ক্ষার সঙ্গে প্রতারণা স্বরূপ। শহীদদের রক্তকে অবমাননা করে বিদেশের মাটিতে এমন বৈঠক কখনো মেনে নেওয়া যায় না।” তিনি জোর দেন, দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ হবে দেশের জনগণের মাধ্যমে, বিদেশি আলোচনার মাধ্যমে নয়।
১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থানের স্মরণ করিয়ে তিনি বলেন, “তখন একটি সামাজিক চুক্তি হয়েছিল যা বাস্তবায়িত না করে দেশ ভুল পথে চালিত হয়েছে। এখন একটি নতুন জাতীয় বন্দোবস্ত জরুরি, যা হবে জনগণের ইচ্ছার ভিত্তিতে, কোনো একক দলের স্বার্থে নয়।”
সরকার যদি বিচার, সংস্কার ও সংবিধান প্রণয়নে ব্যর্থ হয়, তবে দ্বিতীয় গণঅভ্যুত্থানের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, “আমরা এমন কোনো নির্বাচনেও অংশ নেব না যা জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটায় না।” তিনি উল্লেখ করেন, “শুধু রাজার বদলে রাজা নয়, কাঠামোগত পরিবর্তন দরকার। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে অর্জিত স্বপ্ন পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম চলবে।”
অন্তর্বর্তী সরকারকে আহ্বান জানিয়ে নাসির উদ্দিন বলেন, “শহীদদের আত্মত্যাগ ও আহতদের কষ্টের যথাযথ মূল্যায়ন করতে হবে এবং গ্রামীণ জনপদে গিয়ে জনগণের চাওয়া জানতে হবে। সরকারের উচিত জনগণের বেদনা বুঝে বিচার ও সংস্কার প্রক্রিয়ায় সক্রিয় হওয়া।”
বিএনপির অবস্থান নিয়ে তিনি বলেন, “একসময় ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চাইলেও এখন রমজানের আগেই নির্বাচন কথা বলা হচ্ছে, কিন্তু বিচার, নতুন সংবিধান বা জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র স্পষ্ট নয়। তারা কেবল ক্ষমতার ভাগ চাইছে, গণআকাঙ্ক্ষার প্রতিনিধিত্ব করছে না।”
নাসির উদ্দিন আরও বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার ও বিএনপি একযোগে জনগণকে উপেক্ষা করে সংকট তৈরি করছে। জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া কোনো সরকারই বৈধ নয়।”
নির্বাচন কমিশন নিয়ে তিনি বলেন, “শুধু নির্বাচন করলেই হবে না, সঠিক বিচার ও সাংবিধানিক সংস্কার ছাড়া নির্বাচন অর্থহীন। বর্তমান কমিশন জনগণের আস্থার প্রতীক নয়, বরং নির্দিষ্ট রাজনৈতিক শক্তির পক্ষে কাজ করছে। তাই কমিশন পুনর্গঠন, আরপিও সংশোধন ও জাতীয় ঐকমতের ভিত্তিতে নির্বাচন ছাড়া গণতান্ত্রিক উত্তরণ সম্ভব নয়।”
আপনার মতামত লিখুন