লন্ডনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠকে নির্বাচন ও সংস্কার বিষয়ে অগ্রগতির আশ্বাস

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলে একান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চলা এই বৈঠকের শুরুতে উভয় পক্ষের প্রতিনিধি দলের মধ্যে আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়। এরপর দুজনের মধ্যে একান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা শেষে আয়োজিত যৌথ সংবাদ সম্মেলনে উভয় পক্ষই সন্তুষ্টি প্রকাশ করে।

সংবাদ সম্মেলনে নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান জানান, বৈঠকে সংস্কার ও বিচার বিষয়ক আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে, যা আগামী নির্বাচনের আগেই দৃশ্যমান হবে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ‘হত্যাযজ্ঞের’ বিচার নিয়েও আলোচনার প্রসঙ্গ এলে খলিলুর রহমান বলেন, যৌথ বিবৃতিতে এসব বিষয়ে উত্তর রয়েছে।

এদিকে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী জানান, নির্বাচন কমিশন সংস্কার ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়ার প্রসঙ্গ এই বৈঠকে তোলা হয়নি। তিনি বলেন, তারা সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন চান, তবে কোন দল অংশ নেবে আর কোন দল নেবে না, তা সংশ্লিষ্ট দলের সিদ্ধান্ত।

নির্বাচন পূর্বঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ীই হবে কিনা—এমন প্রশ্নে খলিলুর রহমান বলেন, সংস্কার কাজ দ্রুত শেষ হলে পূর্বের সময়সূচিই বহাল থাকবে। বৈঠক সম্পর্কে উভয় পক্ষেরই ইতিবাচক মূল্যায়ন উঠে আসে। আমীর খসরু বলেন, নির্বাচনের আগে ও পরে একসঙ্গে দেশ গঠনে কাজ করার আগ্রহ রয়েছে। খলিলুর রহমানও সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, সন্তুষ্ট না হলে যৌথ বিবৃতি দিতাম না।

জাতীয় সরকার গঠনের প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে আমীর খসরু জানান, এটি এখন আলোচনার বিষয় নয়, তবে নির্বাচনের পর আলোচনা হতে পারে। বৈঠক শেষে পাঠানো যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, আলোচনা অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তারেক রহমান ২০২৬ সালের রমজানের আগেই নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তাব দেন এবং জানান, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও এই সময়কে উপযুক্ত মনে করেন। জবাবে ড. ইউনূস বলেন, এপ্রিলের প্রথমার্ধেই নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় অগ্রগতি অর্জিত হলে রমজানের আগেই নির্বাচন সম্ভব।

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, তারেক রহমান প্রধান উপদেষ্টার অবস্থানকে স্বাগত জানান এবং তাকে ধন্যবাদ জানান। ড. ইউনূসও তারেক রহমানকে ফলপ্রসূ আলোচনার জন্য ধন্যবাদ জানান।