লন্ডনে তারেক-ইউনূস বৈঠক শেষ, আলোচনার কেন্দ্রে নির্বাচন ও সংস্কার

লন্ডনের ডোরচেস্টার হোটেলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে বহুল প্রত্যাশিত বৈঠক শেষ হয়েছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী এই একান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে ডরচেস্টার হোটেল ত্যাগ করেন তারেক রহমান। তাকে স্বাগত জানান জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, বৈঠক শেষে উভয় পক্ষের প্রতিনিধি দল যৌথ সংবাদ সম্মেলন করবেন। এর আগে, আলোচনার বিষয়বস্তু নির্ধারণে প্রধান উপদেষ্টার প্রতিনিধিদের সঙ্গে তারেক রহমানের দলের অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হয়।
বিএনপির পক্ষ থেকে জানা গেছে, এই উচ্চপর্যায়ের আলোচনায় গুরুত্ব পায় আগামী জাতীয় নির্বাচন, নির্বাচনকালীন প্রশাসনের নিরপেক্ষতা, আদালতের রায় মানা, এবং সরকার ও প্রশাসনে স্বৈরাচারপন্থীদের প্রভাবসহ নানা সংস্কারমূলক বিষয়।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ আলোচনার মূল ফোকাস ছিল নির্বাচনের সময় এগিয়ে আনার দাবি। অন্তর্বর্তী সরকার যেখানে ২০২৬ সালের এপ্রিলের নির্বাচন ঘোষণা করেছে, বিএনপি সেখানে চলতি বছরের ডিসেম্বরকে উপযুক্ত সময় বলে মনে করছে। যদিও জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারিতেও তারা নির্বাচন মেনে নিতে পারে বলে বিএনপির একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই বৈঠককে “টার্নিং পয়েন্ট” হিসেবে আখ্যা দেন। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয়ই আলোচনায় এসেছে। আমরা আশা করি, এই আলোচনার মধ্য দিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য ফয়সালায় পৌঁছানো যাবে।”
এদিকে, আলোচনার পটভূমিতে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হচ্ছে তারেক রহমানের দেশে ফেরার সম্ভাবনা। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বৃহস্পতিবার বলেন, “তারেক রহমানের দেশে আসতে কোনো সমস্যা নেই।” ইতোমধ্যে তার আইনি জটিলতা নিষ্পন্ন হয়েছে বলেও জানান তার আইনজীবীরা।
চার দিনের সফরে ড. ইউনূস বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন। আর ২০০৮ সাল থেকে সপরিবারে লন্ডনে অবস্থান করে দল পরিচালনা করছেন তারেক রহমান।
এই আলোচিত বৈঠক ঘিরে শুধু দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন নয়, প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যেও ব্যাপক কৌতূহল দেখা গেছে। বৈঠকের দিন সকাল থেকেই ডোরচেস্টার হোটেলের সামনে বিএনপি নেতাকর্মীদের জড়ো হতে দেখা যায়।
জাতীয় রাজনীতিতে সম্ভাব্য সমঝোতার একটি সম্ভাবনা তৈরি করায় এ আলোচনার ফলাফলের দিকে এখন তাকিয়ে রয়েছে পুরো দেশ।
আপনার মতামত লিখুন