শেষপ্রান্তে ঈদের ছুটি, ফিরতি যাত্রায় স্বস্তি—তবু কেউ কেউ ছুটছেন বাড়ির পথে

দ্রুতই শেষ হয়ে গেল ঈদুল আজহার দীর্ঘ ছুটি। আজ শুক্রবার নবম দিন—দীর্ঘ ১০ দিনের টানা ছুটির একেবারে শেষ প্রান্তে। রাজধানী ঢাকা এখন ফিরতি মানুষের পদচারণায় আবারও প্রাণ ফিরে পাচ্ছে। তবে চিত্রটা একপাক্ষিক নয়—অনেকে যেখানে ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফিরছেন, অন্যদিকে কেউ কেউ এখনই রওনা দিচ্ছেন প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে।

শুক্রবার (১৩ জুন) গাবতলী বাস টার্মিনাল ও আমিনবাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকায় প্রবেশ এবং প্রস্থান—দুই দিকেই যাত্রীর চলাচল প্রায় সমান। যদিও গতকাল রাত ও ভোরে কিছুটা চাপ ছিল, সারাদিনে তা ছিল তুলনামূলকভাবে নিয়ন্ত্রিত ও স্বাভাবিক।

গাবতলী টার্মিনালের হানিফ এন্টারপ্রাইজ কাউন্টারের একজন কর্মকর্তা জানান, এখনো অনেক যাত্রী ঢাকার বাইরে যাচ্ছেন। ভোরের দিকে যাত্রীর সংখ্যা বেশি থাকলেও দুপুর ও বিকেল পর্যন্ত তা কিছুটা কমে আসে। তবে সন্ধ্যার পর থেকে আবারও যাত্রীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে।

বাস কাউন্টারগুলোতেও দেখা গেছে অর্ধেক আসনে যাত্রী নিয়ে বাস ছাড়ছে। শ্যামলী এন. আর. ট্রাভেলসের একটি নন-এসি বাস কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে মাত্র ১২ জন যাত্রী নিয়ে। হেলপার ইমারুল জানান, যাওয়ার সময় আসন কিছু খালি থাকলেও ফেরার সময় বাসগুলো পূর্ণ থাকে।

বাসযাত্রী জাহিদ আহমেদ বলেন, “আমি বাসায় কেয়ারটেকারের কাজ করি। ঈদের সময় মালিক ছুটি দেয়নি, কারণ সব ভাড়াটিয়া বাড়ি চলে গিয়েছিল। এখন তারা ফিরছে, তাই আমিও ছুটি পেয়েছি। এখন বাড়ি যাচ্ছি পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে।”

আমিনবাজার সেতু পার হয়ে রাজধানীমুখী বাসগুলোর প্রবেশও ছিল নিরবিচার। বিভিন্ন জেলার বাসগুলো যাত্রী নামিয়ে নিয়ে গাবতলীর কাউন্টার এলাকায় পৌঁছাচ্ছে। দিনাজপুর থেকে আগত একটি হানিফ বাসের চালক জানান, “বাস ভর্তি যাত্রী ছিল। রাস্তাও ছিল ফাঁকা, কোথাও যানজটে পড়িনি। আগের মতোই দিনাজপুরমুখী যাত্রীও হচ্ছে।”

যাত্রী নীরব হাসান বলেন, “আসার সময় কোনো অসুবিধা হয়নি। রাস্তাঘাট একদম ফাঁকা। এমন ভ্রমণ খুবই আরামদায়ক।”

প্রসঙ্গত, সরকারি ছুটি শেষ হচ্ছে আগামীকাল ১৪ জুন, শনিবার। ফলে এখনো যারা ফিরছেন, তাঁদের যাত্রা স্বস্তিকর ও শৃঙ্খলাপূর্ণ থাকছে। আর যারা কর্মজীবনে ফিরছেন, তাঁদের জন্য রোববার, ১৫ জুন থেকে আবারও শুরু হচ্ছে কর্মব্যস্ত জীবন।

ঈদের আনন্দ, ভ্রমণের প্রশান্তি আর স্বজনদের ভালোবাসা—সব মিলিয়ে এবারকার ঈদ শেষে রাজধানীমুখী মানুষদের মুখে যেন ঝলমলে তৃপ্তির ছাপ।