ইরান-ইসরায়েলের তীব্র সংঘাত: ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও প্রতিরক্ষার মোড়

চতুর্থ দিন পার করতে চলেছে ইরান ও ইসরায়েলের তীব্র সংঘাত, যা চারদিনে একটি বিশাল ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রদর্শনীতে রূপ নিয়েছে। মার্কিন মদদপুষ্ট ইসরায়েল এবং তার মিত্রপক্ষ হয়তো কল্পনাও করেনি ইরানের প্রতিরোধমূলক ও জবাবী হামলা এত শক্তিশালী ও সুচারুভাবে কার্যকর হবে।
ইসরায়েলের সর্বাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘আয়রন ডোম’ এবার ব্যর্থতার নজির দেখাচ্ছে। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে ব্যাপক ক্ষতি ঘটেছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সোমবার স্বীকার করেন, গত চার দিনে ইরান অন্তত ৩৭০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও শত শত বিস্ফোরকবাহী ড্রোন নিক্ষেপ করেছে। এই হামলায় ইসরায়েলের অন্তত ৩০টি সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ২৪ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও ৫৯২ জন।
ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ভাঙনের বিষয়টি ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ‘দ্য লোকাল কলের’ সম্পাদক মেরন র্যাপোপোর্ট আল জাজিরাকে জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যদিও ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী হামলাটি প্রত্যাশিত বলে দাবি করছে, তারা বিস্মিত যে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রগুলো এত বিস্তৃতভাবে আঘাত করতে পেরেছে এবং কিছু আঘাত সম্ভবত জনসাধারণের সামনে আনা হয়নি।
ইসরায়েলি সাংবাদিক গিদেওন লেভি হারেৎজ পত্রিকায় বলেছেন, এই হামলা চলতে থাকলে ইসরায়েলিরা একসময় ক্লান্তি ও ভয় ছাড়াও যুদ্ধের মূল্য নিয়ে প্রশ্ন তুলবে। তিনি উল্লেখ করেছেন, এবার গাজা বা লেবাননের সংঘাতের মতো নয়, বেসামরিক জনগণের উপর ক্ষতি আগের যে কোনও সময়ের চেয়ে বেশি হতে পারে, যা ইসরায়েলের জন্য দীর্ঘমেয়াদে টেকসই নয়।
এর আগে ১৩ জুন ভোরে ইসরায়েলের বিমানবাহিনী তেহরানসহ ইরানের আটটি শহরে আকস্মিক বিমান হামলা চালায়, যা ‘দ্য রাইজিং লায়ন’ নামে পরিচিত। এই হামলায় ইরানের অন্তত ১০০টি স্থাপনায় ক্ষতি হয়েছে এবং সেনাপ্রধান মোহাম্মদ বাঘেরিসহ কয়েকজন উচ্চ পদস্থ সেনা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। এর পরপরই ইরান ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ থ্রি’ নামে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে প্রতিহিংসামূলক সেনা অভিযান শুরু করে।
আপনার মতামত লিখুন