ইরান এনপিটি থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা: পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তারে নতুন উত্তেজনা

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০২৫, ১২:২৮ পূর্বাহ্ণ
ইরান এনপিটি থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা: পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তারে নতুন উত্তেজনা

বিশ্বব্যাপী পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধে গঠিত আন্তর্জাতিক চুক্তি ‘নন-প্রোলিফারেশন ট্রিটি (এনপিটি)’ থেকে সরে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করছে ইরান। সোমবার (১৬ জুন) তেহরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য প্রকাশ করে। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাঈ হামানে বলেন, সাম্প্রতিক ঘটনাবলির পরিপ্রেক্ষিতে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এবং বর্তমানে পার্লামেন্টে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব প্রণয়নের কাজ চলছে, যা সরকারের সঙ্গে সমন্বয়ে এগিয়ে যাবে।

১৯৭০ সালে স্বাক্ষরিত এনপিটি চুক্তিতে ইরান বেসামরিক পরমাণু শক্তির অধিকার নিশ্চিত করলেও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি না করার প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে সম্প্রতি আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA) ইরানের বিরুদ্ধে চুক্তির শর্ত ভঙ্গের অভিযোগ এনেছে। একই সঙ্গে ইসরায়েল দাবি করেছে, ইরান পারমাণবিক বোমা তৈরির এক ধাপে রয়েছে, যা নিয়েই গত সপ্তাহে ইরানে বিমান হামলা চালায় তেলআবিব।

ইরান অবশ্য শুরু থেকেই বলছে, তাদের পরমাণু কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ। দেশটির প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান পুনর্ব্যক্তি করেছেন, “পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি ইসলামি শরিয়াহ এবং সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ির ফতোয়ার পরিপন্থি।”

তবে একই দিন পার্লামেন্টে এনপিটি থেকে সরে যাওয়ার প্রস্তাব গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হচ্ছে, যা ইরানের পরমাণু শক্তি প্রকাশ্যে আনার পথ সুগম করতে পারে। খবর রয়েছে, আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ইরান তার পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা চালাতে পারে।

তেহরান থেকে জানানো হয়েছে, এখনও চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি এবং বিষয়টি সংসদে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। ইরান আইএইএ-এর সাম্প্রতিক প্রস্তাবনাকে ইসরায়েলের হামলার জন্য ভূমিকা তৈরি হিসেবে উল্লেখ করেছে। মুখপাত্র বাঘাঈ বলেন, “যারা ওই প্রস্তাবে ভোট দিয়েছে, তারাই মূলত ইসরায়েলের হামলার ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছে।”

উল্লেখযোগ্য, ইসরায়েল কখনো এনপিটিতে যোগ দেয়নি এবং পরমাণু অস্ত্র থাকার ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি, যদিও ধারণা আছে তাদের কাছে অস্ত্র রয়েছে। ইরানের দাবি, মধ্যপ্রাচ্যের একমাত্র গণবিধ্বংসী অস্ত্রের অধিকারী হলো জায়নিস্ট শাসকগোষ্ঠী।

বিশ্লেষকদের মতে, যদি ইরান এনপিটি থেকে বেরিয়ে যায়, তবে তা হবে পরমাণু কূটনীতির নতুন এক উত্তাল অধ্যায়ের সূচনা, যা মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্ব রাজনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে।