জাতীয় নির্বাচন বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত জানানোর আহ্বান বিএনপির

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে দ্রুত সিদ্ধান্ত জানাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। সোমবার (১৬ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবে নাগরিক ঐক্যের উদ্যোগে আয়োজিত “বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং কল্যাণ রাষ্ট্রের ভাবনায় জাতীয় বাজেট ২০২৫-২৬” শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ডেমোক্রেটিক ট্রান্সফরমেশনের দিকে অগ্রসর হতে হলে অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকের আলোচনার ভিত্তিতে গৃহীত সিদ্ধান্ত দ্রুত নির্বাচন কমিশনে যথাযথ প্রক্রিয়ায় পৌঁছে দেওয়া হবে, যাতে কমিশন জনগণের সামনে বলতে পারে—তারা সরকারের কাছ থেকে কোনো নির্দেশনা পেয়েছে।

সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, বৈঠকে কারও দায়মুক্তি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হয়েছে এবং এটি সাংবিধানিকভাবে বৈধ। সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ অনুযায়ী এই সরকার কাজ করছে। তিনি মনে করিয়ে দেন, উপদেষ্টারা মন্ত্রীর মর্যাদা ভোগ করলেও সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তাদের সাংসদ হওয়ার যোগ্যতা থাকতে হবে, যেখানে বিদেশি নাগরিকত্ব গ্রহণ অনুমোদিত নয়।

তিনি আরও বলেন, এই সরকারের বৈধতা পরবর্তী সংসদে অনুমোদনের প্রয়োজন হবে, যা অন্তর্বর্তী সরকারের বিবেচনায় রাখা উচিত। তিনি প্রশ্ন তোলেন, সেই অনুমোদন কীভাবে এবং কোন প্রক্রিয়ায় দেওয়া হবে, সেটিও ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। সেখানে আরও বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী জনশক্তি পার্টির সভাপতি শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, এবি পার্টির সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জু, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল এবং নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার।

প্রসঙ্গত, গত ১৩ জুন লন্ডনে তারেক রহমান ও অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে প্রধান উপদেষ্টা মত দেন যে, সংস্কার ও বিচার প্রক্রিয়ায় যথাযথ অগ্রগতি হলে রমজানের আগেই, অর্থাৎ ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব। এরপর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান জানান, প্রধান উপদেষ্টা আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলেছেন। তবে এর আগে প্রয়োজনীয় অগ্রগতি অর্জন জরুরি।

এদিকে নির্বাচন কমিশনের প্রধান নাসির উদ্দিন লন্ডনের ঘোষণার বিষয়ে বলেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। কারণ এখন পর্যন্ত তাদের কাছে অফিসিয়াল কোনো তথ্য আসেনি। তিনি বলেন, যৌথ বিবৃতি আন-সাইনড এবং অফিসিয়ালি কিছু না এলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়।