আকাশ থেকে প্রত্যক্ষ যুদ্ধের ঝুঁকি: পাইলট এনাম তালুকদারের অভিজ্ঞতা

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: বুধবার, ১৮ জুন, ২০২৫, ৭:০২ অপরাহ্ণ
আকাশ থেকে প্রত্যক্ষ যুদ্ধের ঝুঁকি: পাইলট এনাম তালুকদারের অভিজ্ঞতা

বাংলাদেশ বিমানের পাইলট এনাম তালুকদার ঢাকা থেকে রিয়াদগামী একটি ফ্লাইট চালানোর সময় মধ্য আকাশে ইরান থেকে ইসরায়েলে ছোঁড়া ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের ঝলকানি দেখতে পান। রাত ২টা ১৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফ্লাইট শুরু হয়ে ভারত, ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাত পেরিয়ে বাহরাইনের আকাশসীমায় পৌঁছালে সময় স্থানীয় প্রায় ভোর ৫টা। তখন ৪০,০০০ ফুট উচ্চতায় পৃথিবীর নীলাভ চেহারা দেখছিলেন তিনি।

তখনই ইরানের আকাশে হঠাৎ তীব্র আলোর ঝলকানি লক্ষ্য করেন তিনি। প্রথমে সামরিক মহড়ার ধারণা করলেও পরবর্তীতে দেখতে পান একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে দ্রুত ছুটে যাচ্ছে। এই ভয়ংকর দৃশ্য দেখে পাইলট ও কো-পাইলট দ্রুত ফ্লাইটের রুট পরিবর্তনের কথা ভাবেন। ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে যদি কোনোটি দিকভ্রান্ত হয়ে তাদের দিকে এসে আঘাত করে, সেই আতঙ্কেই গা শিউরে ওঠে।

পাইলট হিসেবে বহু ঝুঁকি নিয়েছেন তিনি, তবে আকাশের বুক চিরে ছুটে চলা আগুনের তীরের এ দৃশ্য তার আগে কখনো দেখেননি। দ্রুত বিমানটিকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে অবশেষে গন্তব্য রিয়াদে নিরাপদে অবতরণ করেন। ল্যান্ড করার পর খবর পেয়ে জানতে পারেন ‘ইরান ইসরায়েলে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।’

এই ঘটনা শুধু দুই দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে পুরো অঞ্চলের শান্তির জন্য বিরাট হুমকিস্বরূপ। ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ছিল দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ধরণের, যা বায়ুমণ্ডলের বাইরের উচ্চতায় উঠে তারপর পৃথিবীর দিকে ফিরে আসে। এসব ক্ষেপণাস্ত্র প্রায় ২০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার বা তারও বেশি উচ্চতায় উঠতে পারে এবং মহাকাশের নিচের অংশ দিয়ে সাবঅরবিটাল পথে পৃথিবীতে ফিরে আসে।

এ ঘটনা শুধুমাত্র প্রযুক্তিগত সক্ষমতার প্রদর্শনী নয়, এটি একটি কৌশলগত বার্তাও বহন করে যে, মধ্যপ্রাচ্যের আকাশসীমা এখন কেবল ট্রানজিট করিডোর নয়, বরং সম্ভাব্য যুদ্ধক্ষেত্র হয়ে উঠেছে।

যাত্রীরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই এনাম তালুকদার ও তার কো-পাইলট নিরাপদে বিমান পরিচালনা করে রিয়াদে অবতরণ করেন। কিন্তু তার মনে বারবার প্রশ্ন ঘুরছে—এই আকাশপথ কতটা নিরাপদ? কবে শেষ হবে এসব যুদ্ধ? শেষ পর্যন্ত পৃথিবীর সাধারণ মানুষই চায় শান্তি।