আগৈলঝাড়ায় রান্না করা খাবারে বিষ মিশিয়ে অচেতন করে লুট: সংঘবদ্ধ চক্রের ৪ জন আটক

বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় রান্না করা খাবারে বিষ মিশিয়ে পরিবারের সবাইকে অচেতন করে সর্বস্ব লুটের সময় সংঘবদ্ধ চোর চক্রের চারজনকে আটক করেছে পুলিশ ও স্থানীয়রা। ঘটনার পর গৃহকর্ত্রীকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং আটক চারজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার (১৮ জুন) বিকেলে আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. অলিউল ইসলাম জানান, উপজেলার উত্তর বড় মাগরা গ্রামের বিজয় কবিরাজের বাড়িতে মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। গ্রামবাসী ও পুলিশের সহায়তায় চক্রের চারজন সদস্যকে হাতেনাতে আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন—উজিরপুর থানার হারতা গ্রামের সুজন হাওলাদার (৩৬), চট্টগ্রামের আকবর শাহ থানার লতিফপুর গ্রামের আব্দুল কাদের (৪০), উত্তর বড় মাগরা গ্রামের মোসলেম বখতিয়ার (৫৫) এবং জাহাঙ্গীর আলম (৩০)। বিজয় কবিরাজের ছেলে সাগর কবিরাজ বাদী হয়ে থানায় মামলা করলে অভিযুক্তদের জেলহাজতে পাঠানো হয়।
জানা গেছে, কিছুদিন আগে সুজন ও কাদের ওই বাড়িতে দিনমজুরের কাজ করতে এসেছিল। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় বাড়ির কর্তা ও ছেলে কীর্তনের অনুষ্ঠানে গেলে বাড়িতে একা ছিলেন গৃহকর্ত্রী শেফালি রানী। সন্ধ্যায় তিনি সবার জন্য রান্না করা খাবার ঘরে নিয়ে আসেন। তার অনুপস্থিতিতে অভিযুক্তরা খাবারে অচেতন করার ওষুধ মিশিয়ে রাখে। শেফালি রানী খাবার খেয়ে গভীর ঘুমে অচেতন হয়ে পড়েন।
রাতে কীর্তন শেষে বাড়ি ফিরে ছেলে সাগর মা’কে অচেতন অবস্থায় দেখতে পান এবং খাবারের পাতিলে বিষের মতো কিছু লক্ষ্য করেন। পরে তিনি ঘর থেকে টর্চ নিয়ে বের হয়ে খোঁজাখুঁজির সময় সুজন হাওলাদারকে একটি কাঁঠাল গাছের ডালে বসে থাকতে দেখেন এবং ভিডিও ধারণ করেন। সুজন গাছ থেকে লাফিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে তিনি চিৎকার দেন।
স্থানীয়রা ছুটে এসে অসুস্থ শেফালি রানীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন এবং খুঁজে খুঁজে সুজন ও মোসলেমকে আটক করেন। জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনায় আরও লোক জড়িত থাকার কথা স্বীকার করলে পুলিশকে জানানো হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আরও দুইজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এই ঘটনার পর এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে এবং স্থানীয়রা সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্রের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
আপনার মতামত লিখুন