যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়নি, কার্যক্রম কিছু মাস পিছিয়েছে: গোয়েন্দা প্রতিবেদন

যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক বিমান হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় উল্লেখযোগ্য ধ্বংসস্তুপ হয়নি, তবে এই হামলা ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম কয়েক মাসের জন্য পিছিয়ে দিয়েছে বলে গোপন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে জানা গেছে।
গত শনিবার অত্যাধুনিক বি-২ স্টিলথ বোমারু বিমান ব্যবহার করে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তখন এটিকে ইতিহাসের সবচেয়ে সফল সামরিক অভিযান হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন। কিন্তু মাত্র তিনদিনের মধ্যেই পেন্টাগনের গোয়েন্দা শাখা ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (ডিআইএ) একটি প্রাথমিক মূল্যায়ন প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যেখানে বলা হয়, ইরানের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের বড় অংশ ধ্বংস হয়নি।
গোপনীয় সূত্র থেকে জানা গেছে, হামলার আগে ইরান তার গুরুত্বপূর্ণ ইউরেনিয়ামের মজুদের কিছু অংশ গোপন স্থাপনায় সরিয়ে নিয়েছিল। স্যাটেলাইট চিত্রে ফোর্দো পারমাণবিক স্থাপনায় প্রবেশপথের আশপাশে গর্ত ও ধ্বংসস্তূপ দেখা গেলেও ভূগর্ভস্থ স্থাপনাগুলো প্রায় অক্ষত রয়েছে।
ডিআইএর রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে, হামলায় ইরানের দুইটি পারমাণবিক স্থাপনার প্রবেশপথ বন্ধ হয়েছে এবং কিছু স্থলভাগের অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হলেও মূল ভূগর্ভস্থ স্থাপনাগুলো অক্ষত রয়েছে।
হোয়াইট হাউস গোয়েন্দাদের এই মূল্যায়নকে সম্পূর্ণ ভুল বলে অভিহিত করেছে এবং এটিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে হেয় করার উদ্দেশ্যপূর্ণ প্রচেষ্টা হিসেবে উল্লেখ করেছে। ট্রাম্প নিজেও তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ সিএনএন ও নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনগুলোকে ভিত্তিহীন এবং সফল সামরিক অভিযানের মূল্যায়ন হ্রাস করার চেষ্টা বলে দাবি করেছেন।
মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ‘বাংকার বাস্টার’ নামক ৩০ হাজার পাউন্ড ওজনের অত্যাধুনিক বোমা ব্যবহার করেছে, যা ৬০ ফুট কংক্রিট বা ২০০ ফুট মাটি পেরিয়ে বিস্ফোরণ ঘটাতে সক্ষম।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরান পারমাণবিক কর্মসূচি পুনরায় শুরু করবে কিনা তা নির্ভর করবে তারা ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনাগুলোর মেরামত ও পুনঃখননের কাজে কত দ্রুত অগ্রগতি করতে পারে তার ওপর।
আপনার মতামত লিখুন