খিলক্ষেতে অস্থায়ী মণ্ডপ উচ্ছেদ নিয়ে সরকারের ব্যাখ্যা

ঢাকার খিলক্ষেত এলাকায় রেলের জমিতে স্থাপিত একটি অস্থায়ী মণ্ডপ সরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হওয়ার পর এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। শুক্রবার (২৭ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, আলোচিত মন্দিরটি আসলে দুর্গাপূজার সময় অস্থায়ীভাবে নির্মিত একটি মণ্ডপ, যা রেলওয়ের জমিতে শর্তসাপেক্ষে স্থাপন করা হয়েছিল। পূজা শেষে তা সরিয়ে নেওয়ার কথা থাকলেও আয়োজকরা সেটি না সরিয়ে বরং সেখানে মহাকালী মূর্তি স্থাপন করে মণ্ডপটিকে স্থায়ী রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, ২০২৪ সালের দুর্গাপূজার সময় আয়োজকরা অনুমতি ছাড়াই রেলের জায়গায় মণ্ডপ নির্মাণ করেন। পরে রেল কর্তৃপক্ষ পূজা সম্পন্ন করার সুযোগ দিলেও শর্ত ছিল পূজা শেষে মণ্ডপ সরিয়ে নিতে হবে। তবে আয়োজকদের পক্ষ থেকে তা মানা হয়নি, যা রেলের সঙ্গে করা সমঝোতার লঙ্ঘন বলে বিবেচিত।
রেলওয়ের ভাষ্যমতে, ঢাকা-টঙ্গী রুটে তৃতীয় ও চতুর্থ ডুয়েল গেজ লাইন নির্মাণ প্রকল্পের জন্য রেললাইনের দুই পাশে ২০০ ফুট জায়গা খালি রাখা বাধ্যতামূলক। এই কারণে স্থানীয় দোকান, রাজনৈতিক কার্যালয় এবং অস্থায়ী মণ্ডপসহ সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য একাধিকবার নোটিশ দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত ২৬ জুন শান্তিপূর্ণভাবে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। মণ্ডপে স্থাপিত মূর্তি স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের উপস্থিতিতে বালু নদীতে যথাযথ সম্মানের সঙ্গে বিসর্জন দেওয়া হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সরকারি জমি থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ একটি নিয়মিত প্রশাসনিক প্রক্রিয়া এবং বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী বৈধভাবে নির্মিত ধর্মীয় উপাসনালয়গুলো পূর্ণ সুরক্ষা পায়। তবে সরকারি জমি দখল করে কোনো ধর্মীয় স্থাপনা নির্মাণ অনুমোদনযোগ্য নয়। সরকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে যে, বাংলাদেশ সব সম্প্রদায়ের অধিকার ও উপাসনালয়ের সুরক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য রক্ষায় কখনো পিছিয়ে যায়নি।
একইসঙ্গে, গণমাধ্যম ও সংশ্লিষ্ট সকলকে তথ্য যাচাই ছাড়া প্রতিক্রিয়া দেওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে সরকার।
এদিকে, এই ঘটনাকে ঘিরে ভারতের প্রতিক্রিয়াও এসেছে। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বৃহস্পতিবার জানান, “আমরা ঢাকায় দুর্গা মন্দিরের ক্ষয়ক্ষতির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। আশা করি বাংলাদেশ সরকার যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।” তিনি আরও জানান, ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনের মাধ্যমে এই বিষয়ে বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন