পোপ লিওর উদ্বেগ: আন্তর্জাতিক আইনের অবজ্ঞা ‘লজ্জাজনক’, যুদ্ধ ও নির্যাতন বন্ধে ব্যর্থতা দুঃখজনক

বিশ্বজুড়ে যুদ্ধ-সংঘাতের বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর নির্যাতন ও যুদ্ধাপরাধ রোধে ব্যর্থতা নিয়ে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন চতুর্থদশ পোপ লিও। তিনি বলেন, আজকাল আন্তর্জাতিক আইন ও মানবিক আইনের প্রতি যে ‘লজ্জাজনক’ অবজ্ঞা দেখা যাচ্ছে, তা বিশ্বনেতাদের জন্য অগ্রহণযোগ্য।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া এক পোস্টে পোপ লিও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আইন আর মানবিক আইন যেন আর বাধ্যতামূলক নয়, বদলে এসেছে ক্ষমতার অপব্যবহার।’ তিনি এই পরিস্থিতিকে ‘মানবতা এবং জাতির নেতাদের জন্য লজ্জাজনক’ উল্লেখ করেন।
তার এই মন্তব্য গাজায় ইসরায়েলের হামলার বিরুদ্ধে বাড়তে থাকা সমালোচনার প্রেক্ষাপটে এসেছে। শীর্ষ অধিকার কর্মী ও জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা এই হামলাকে গণহত্যা বলে আখ্যায়িত করেছেন। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগও উঠেছে।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের তথ্য মতে, মার্কিন সহযোগিতায় ইসরায়েলি বাহিনী গাজার বড় অংশ দখল করে প্রায় পুরো জনসংখ্যাকে বাস্তুচ্যুত করেছে। এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৫৬ হাজার ১৫৬ জন নিহত হয়েছেন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রাক্তন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারও স্বীকার করেছেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ‘নিঃসন্দেহে’ গাজায় যুদ্ধাপরাধ করেছে।
তবে ইসরায়েল গাজায় অবরোধ এবং হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রায় এবং প্রস্তাবগুলো মানছে না। গত বছর আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের অবৈধ দখল অবসানের আহ্বান জানায়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। তবে ইউরোপীয় দেশসহ অনেক সদস্য দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্য ও সামরিক সম্পর্ক বজায় রেখেছে।
মে মাসে নতুন পোপ লিও গাজার যুদ্ধ বন্ধের জন্য বিশ্বজুড়ে প্রায় ১.৪ বিলিয়ন ক্যাথলিকের হয়ে আবেদন জানান। তিনি বলেন, ‘এখনই যুদ্ধবিরতি চাই।’ গাজায় চলমান সংঘাতের পাশাপাশি সুদান, ইউক্রেনসহ বিশ্বজুড়ে মারাত্মক সংঘাত ও নির্যাতনের খবরও বিরাজ করছে।
আপনার মতামত লিখুন