ব্যবসায়ীদের দাবি: এনবিআর আন্দোলনরত কর্মচারীরা ‘কলম বিরতি’ ও ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে দ্রুত কাজে যোগ দিক

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: রবিবার, ২৯ জুন, ২০২৫, ৮:৩৮ অপরাহ্ণ
ব্যবসায়ীদের দাবি: এনবিআর আন্দোলনরত কর্মচারীরা ‘কলম বিরতি’ ও ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে দ্রুত কাজে যোগ দিক

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দেশের অর্থনীতির স্বার্থে কলম বিরতি এবং ‘কমপ্লিট শাটডাউন’-এর মতো কর্মসূচি প্রত্যাহার করে কোনো শর্ত ছাড়াই তৎক্ষণাৎ কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ব্যবসায়ীরা। তারা বলেছেন, এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ মোটেও কাম্য নয়। পাশাপাশি আন্দোলনরত কর্মকর্তাদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষা ও দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত না হওয়া নিশ্চিত করার জন্য সরকারের দ্রুত পদক্ষেপের প্রয়োজন।

২৮ জুন রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দেশের শীর্ষস্থানীয় বাণিজ্য সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিরা এই কথা বলেন। বাংলাদেশ চেম্বার অফ ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) প্রেসিডেন্ট আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী (পারভেজ) লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ প্রেসিডেন্ট মাহমুদ হাসান খান, বিটিএমএ প্রেসিডেন্ট শওকত আজিজ রাসেল, এলএফএমইএবি প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, ডিসিসিআই প্রতিনিধি আবুল কাশেম খান, বিপিজিএমইএ প্রেসিডেন্ট শামীম আহমেদ, বিটিএমএ সাবেক সভাপতি এ মতিন চৌধুরী, এমসিসিআই প্রেসিডেন্ট কামরান তানভীর রহমান, এফবিসিসিআই সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন, বিসিএমইএ প্রেসিডেন্ট মঈনুল ইসলাম ও ইন্টারন্যাশনাল চেম্বারের সিমিন রহমান।

তারা বলেন, এনবিআরের চেয়ারম্যান অপসারণ কাম্য নয় এবং এতে কোনো সফলতা আসবে না। এজন্য দেশের ও ব্যবসার স্বার্থে সব পক্ষের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে।

কমপ্লিট শাটডাউনের কারণে প্রতিদিন প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার আমদানি ও রপ্তানি ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে দেশ ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চাপে থাকা ব্যবসায়ীরা নতুন করে এনবিআরের অচলাবস্থার কারণে আরও সমস্যায় পড়েছেন। তারা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে আসার আহ্বান জানান।

তারা আরও বলেন, সব অফিসারই অসৎ নয়, তাদেরও ভবিষ্যৎ আছে, যা সরকারকে বিবেচনা করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, চলমান অবস্থার কারণে ব্যবসায়ীরা সংকটাপন্ন অবস্থায় পৌঁছেছেন। এজন্য প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে অর্থ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা) যৌথভাবে আন্দোলনরত কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সমাধান আনার আহ্বান জানিয়েছে।

আন্দোলনকারীদের দেশের অর্থনীতির স্বার্থে ‘কলম বিরতি’ ও ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি বাতিল করে কোনো শর্ত ছাড়াই কাজে যোগ দেওয়ারও আবেদন জানানো হয়েছে।

আইসিসিবির সভাপতি মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, যেকোনো দেশের সরকারের সঙ্গে বেসরকারি খাতের সংলাপ অত্যন্ত জরুরি। তবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে এই যোগাযোগ অনেকটাই স্তিমিত। তিনি জানান, চেয়ারম্যান অপসারণের পর অন্য সদস্যদের অপসারণের দাবিও উঠতে পারে, যা সমস্যাকে আরও জটিল করবে।

এলএফএমইএবি সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় বাজার আমাদের জন্য অপেক্ষা করবে না। যুদ্ধ ছাড়া কোনো দেশের কাস্টমস বন্ধ থাকে না। ব্যবসায়ীরা এনবিআরের সংস্কার চান, তবে এনবিআরে অনেক সৎ কর্মকর্তা আছেন, তাদের ভবিষ্যৎ কী হবে সেটাও সরকারকে বিবেচনা করতে হবে।

বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, এনবিআরের কর্মকর্তারা অনেকদিন ব্যবসায়ীদের হয়রানি করেছে, এখন সরকারকেও হয়রানি করছে। তাই দেশের স্বার্থে সমস্যার দ্রুত সমাধান জরুরি।