পাকিস্তানে আত্মঘাতী হামলায় ১৩ সেনা নিহত, আহত ২৯

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: সোমবার, ৩০ জুন, ২০২৫, ১১:২৮ পূর্বাহ্ণ
পাকিস্তানে আত্মঘাতী হামলায় ১৩ সেনা নিহত, আহত ২৯

পাকিস্তানের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত হয়েছেন দেশটির ১৩ জন সেনা সদস্য। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২৯ জন। শনিবার দুপুরে উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলার একটি এলাকায় ভয়াবহ এই হামলার ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় এক সরকারি কর্মকর্তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এএফপিকে জানান, সেনাবাহিনীর একটি গাড়িবহরে একটি বিস্ফোরকবোঝাই গাড়ি ঢুকে পড়ে এবং সঙ্গে সঙ্গে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই ১৩ জন সেনা প্রাণ হারান। আহতদের মধ্যে ১০ জন সামরিক সদস্য এবং ১০ জন বেসামরিক মানুষ রয়েছেন।

বিস্ফোরণের ফলে কাছাকাছি অবস্থিত দুটি বাড়ির ছাদ ধসে পড়ে এবং সেখানে থাকা ৬ জন শিশু আহত হয়। হাসপাতালসূত্রে জানা গেছে, আহত সেনাদের মধ্যে অন্তত চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এই হামলার দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানভিত্তিক নিষিদ্ধ তালেবান গোষ্ঠী তেহরিক-ই তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর একটি উপশাখা, ‘হাফিজ গুল বাহাদুর আর্মড গ্রুপ’।

প্রসঙ্গত, খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তান— পাকিস্তানের এই দুই সীমান্তবর্তী প্রদেশ বিগত কয়েক বছরে সন্ত্রাসী হামলার প্রধান ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছে। খাইবার পাখতুনখোয়া মূলত টিটিপি’র প্রভাবাধীন এলাকা, যেখানে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটি দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। অন্যদিকে, বেলুচিস্তানে সক্রিয় রয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদী ‘বালোচ লিবারেশন আর্মি’ (বিএলএ), যারা প্রদেশটিকে পাকিস্তানের মানচিত্র থেকে বিচ্ছিন্ন করার লক্ষ্যে বিভিন্ন সহিংস তৎপরতায় জড়িত।

২০২১ সালে আফগান তালেবান সরকার কাবুলে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে। ২০২৪ সাল ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ। শুধু ওই বছরেই দেশটিতে ৪৪টি বড় সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে, যা গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ।

এই হামলাগুলোর ফলে ২০২৪ সালে প্রাণ হারান ৬৮৫ জন সেনা এবং ৯২৭ জন বেসামরিক নাগরিক। পাল্টা অভিযানে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে নিহত হয়েছে ৯৩৪ জন সন্ত্রাসী।

এই প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রশ্ন এবং সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে সন্ত্রাসবিরোধী উদ্যোগের কার্যকারিতা নিয়ে দেশটির ভেতরে ও বাইরে উদ্বেগ ক্রমেই বাড়ছে।