শেখ হাসিনার ফোনালাপে ঝড়: জুলাই অভ্যুত্থানে বিক্ষোভ দমনে ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ’

জুলাই ২০২৪ সালের গণআন্দোলনের সময় আন্দোলনকারীদের ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার এবং নির্বিচারে গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা—এমন তথ্য পাওয়া গেছে ফাঁস হওয়া একটি ফোনালাপে। এই রেকর্ডিংয়ের সত্যতা যাচাই করে বিবিসি আই এবং বাংলাদেশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) নিশ্চিত করেছে।
ফোনালাপটি ২০২৫ সালের মার্চে অনলাইনে ফাঁস হয়। রেকর্ডিংয়ে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, ‘যেখানেই বিক্ষোভকারীদের পাওয়া যাবে, সেখানে গুলি চালানো হবে।’ সে সময় রাজধানীতে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছিল এবং পুলিশের হাতে নিহত বিক্ষোভকারীদের ভিডিও ভাইরাল হচ্ছিল।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালও এই রেকর্ডিংকে বিচার কার্যে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বিপক্ষের অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগ বলেছে, রেকর্ডিংয়ের সত্যতা নিশ্চিত নয় এবং যদি সত্যি হয়, তা ছিল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য বৈধ ব্যবস্থা। দল দাবি করেছে, তাদের নেতারা কখনো হত্যা নির্দেশ দেননি, বরং সরকারি সিদ্ধান্ত ছিল সৎ ও অনুপাতিক।
বাংলাদেশ পুলিশ গত জুলাই-আগস্টের ঘটনার তদন্তে ৬০ জন পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে এবং নিরপেক্ষ তদন্ত চলছে।
বর্তমানে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার চলছে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, তবে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ অনিশ্চিত।
এ ঘটনায় রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক পরিপ্রেক্ষিতে নতুন একটি অধ্যায় শুরু হওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
আপনার মতামত লিখুন