‘নতুন বাংলাদেশ’ গড়তে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের, পালিত হলো প্রথম ‘জুলাই শহীদ দিবস’

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: বুধবার, ১৬ জুলাই, ২০২৫, ৯:৫৯ অপরাহ্ণ
‘নতুন বাংলাদেশ’ গড়তে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের, পালিত হলো প্রথম ‘জুলাই শহীদ দিবস’

২০২৪ সালের ১৬ জুলাই সংঘটিত ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে প্রথমবারের মতো পালিত হয়েছে ‘জুলাই শহীদ দিবস’। এ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বৈষম্যহীন, দুর্নীতি ও স্বৈরাচারমুক্ত একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

বুধবার (১৬ জুলাই) দেওয়া বাণীতে তিনি বলেন, “জুলাই শহীদরা স্বপ্ন দেখেছিলেন একটি বৈষম্যহীন, দুর্নীতি ও স্বৈরাচারমুক্ত নতুন রাষ্ট্রব্যবস্থার। তাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া এই সুযোগকে কাজে লাগাতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “জুলাইয়ের চেতনাকে ধারণ করে নতুন বাংলাদেশের পথে দৃপ্ত পদভারে একযোগে সবাই এগিয়ে যাবো—আজকের দিনে এই হোক আমাদের অঙ্গীকার।”

এই দিবস উপলক্ষে সরকার এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে। সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব সরকারি-বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দেশের মসজিদগুলোতে বিশেষ দোয়া ও অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রার্থনা আয়োজন করা হয়।

অধ্যাপক ইউনূস তার বাণীতে বলেন, “প্রথমবারের মতো আজ দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে ‘জুলাই শহীদ দিবস’। এই দিনে আমি গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারের শৃঙ্খল থেকে জাতিকে মুক্ত করার আন্দোলনে আত্মোৎসর্গকারী সকল শহীদকে।”

তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই ছিল এক অবিস্মরণীয় দিন, যেদিন বৈষম্যমূলক কোটাব্যবস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর পুলিশ ও সন্ত্রাসীদের হামলায় চট্টগ্রাম, রংপুর ও ঢাকায় অন্তত ছয়জন শহীদ হন। সেই আত্মত্যাগ গোটা আন্দোলনে নতুন গতি আনে এবং দেশজুড়ে শুরু হয় ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থান, যা শেষ পর্যন্ত স্বৈরাচারের পতনের মাধ্যমে নতুন ভোরের সূচনা ঘটায়।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, অন্তর্বর্তী সরকার শহীদদের স্মরণ ও পরিবারের পাশে দাঁড়াতে বেশ কিছু কল্যাণমূলক উদ্যোগ নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে গঠন করা হয়েছে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর’ এবং ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’। শহীদদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুত ও গেজেটে প্রকাশের কাজ চলছে।

প্রতিটি শহীদ পরিবারকে এককালীন ৩০ লাখ টাকা ও মাসিক ভাতা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। আহত আন্দোলনকারীদের কল্যাণেও নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। বাণীর শেষাংশে অধ্যাপক ইউনূস শহীদদের আত্মার মাগফেরাত ও শান্তি কামনা করেন।