বিয়েতে কমছে তরুণদের আগ্রহ, সন্তান গ্রহণেও সংকট: বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসে উদ্বেগ প্রকাশ

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: বুধবার, ১৬ জুলাই, ২০২৫, ৯:৪৯ অপরাহ্ণ
বিয়েতে কমছে তরুণদের আগ্রহ, সন্তান গ্রহণেও সংকট: বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসে উদ্বেগ প্রকাশ

পেশা, অর্থনৈতিক অবস্থা ও ব্যক্তিস্বার্থসহ নানা কারণে বিয়ে এবং সন্তান গ্রহণে আগ্রহ কমছে তরুণদের মধ্যে। সম্প্রতি ১৪ দেশের ১৪ হাজার তরুণের ওপর পরিচালিত জরিপে এ চিত্র উঠে এসেছে। জরিপটি করেছে জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) ও ইউ গভ সার্ভে।

বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস ২০২৫ উপলক্ষে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় এই তথ্য জানানো হয়। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়, বিশ্ব জনসংখ্যা হ্রাস পেলে ভবিষ্যতে তা বিলুপ্তিও হতে পারে।

প্রকাশিত ‘স্টেট অব ওয়ার্ল্ড পপুলেশন’ রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিশ্ব জনসংখ্যা আট বিলিয়নের নিচে নেমে আসা সমস্যা নয়, প্রকৃত সমস্যা প্রজনন হারের পতন। এতে বিশ্বের বড় এক জনগোষ্ঠী সন্তান গ্রহণের সুযোগ ও আকাঙ্ক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে।

সভায় স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, “ক্ষমতায়নের পূর্বশর্ত হলো অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা। আর্থিক সক্ষমতা থাকলে ক্ষমতায়নের পথ সুগম হয়। সম্ভাবনাময় ও ন্যায্য বিশ্ব গড়তে সমতা অর্জন জরুরি, এজন্য বাধা দূর করতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “তারুণ্যের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে উপযুক্ত শিক্ষা, সহায়ক পরিবেশ ও সচেতনতা প্রয়োজন। সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।”

জরিপ অনুযায়ী, একাধিক সন্তান নেওয়ার ইচ্ছা থাকলেও প্রায় অর্ধেকের বেশি তরুণ তা বাস্তবায়ন করতে পারেন না। প্রতি চারজনের একজন পছন্দমতো সময়ে সন্তান নিতে ব্যর্থ হয়। ৪০ শতাংশ তরুণ পরবর্তীতে সন্তান গ্রহণের আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করেছেন। ১৩ শতাংশ অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণের শিকার ও পরবর্তীতে সন্তান চাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছেন। ১৪ শতাংশের উপযুক্ত সঙ্গীর অভাব রয়েছে। ১৮ শতাংশের পরিবার পরিকল্পনা ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া সম্ভব হয়নি।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেন, “তরুণ সমাজ রাষ্ট্র গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মেশিন লার্নিং ও রোবোটিক্সের উন্নতি জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলবে, যা মোকাবেলায় আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।”

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন জানান, বিশ্ব জনসংখ্যা বর্তমানে ৮২৩ কোটি ৪৫ লাখের বেশি। গত পাঁচ মিনিটে এক হাজার ২৫০ শিশু জন্ম নিয়েছে, আর প্রায় এক হাজারের মৃত্যু হয়েছে। ধারণা করা হয়, ২০৫৬ সালে জনসংখ্যা এক হাজার কোটি এবং ২০৯৮ সালে ১,০৯০ কোটিতে পৌঁছাবে, এরপর কমতে শুরু করবে।

আলোচনা সভায় পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আশরাফী আহমদ স্বাগত বক্তব্য দেন। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জোবায়দা বেগম। সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব ডা. মো. সারোয়ার বারী। অনুষ্ঠানে জাতীয় পর্যায়ে ১০টি ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ কর্মী ও প্রতিষ্ঠানের হাতে সনদ ও ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়।