গোপালগঞ্জে আবারও কর্মসূচির ঘোষণা, মুজিববাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার শপথ নাহিদ ইসলামের

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই, ২০২৫, ৪:৪৫ অপরাহ্ণ
গোপালগঞ্জে আবারও কর্মসূচির ঘোষণা, মুজিববাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার শপথ নাহিদ ইসলামের

গোপালগঞ্জে আবারও কর্মসূচি চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার পর নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি জানান, জীবিত থাকলে গোপালগঞ্জের প্রতিটি উপজেলায়, প্রতিটি গ্রামে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবেন এবং সেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পতাকা উড়বে। তাঁর ভাষায়, “গোপালগঞ্জ মুজিববাদীদের হবে না, বাংলাদেশপন্থিদের হবে।”

ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেন, শহীদ বাবু মোল্লা ও শহীদ রথীন বিশ্বাসের গোপালগঞ্জকে পুনরুদ্ধার করা হবে। মকসুদপুর ও কোটালীপাড়ায় শহীদদের কবর রয়েছে—এই মাটি মুজিববাদীদের হতে দেওয়া হবে না। ইনশাআল্লাহ্, বাংলাদেশের এক ইঞ্চি মাটিও তাদের জন্য নয়। তিনি জানান, গোপালগঞ্জ নিয়ে আগেরদিনের বক্তব্যেই দলের অবস্থান পরিষ্কার করা হয়েছে এবং এই জেলার প্রতি রাজনৈতিক বৈষম্যের বিরোধিতা করেন। তাঁর ভাষায়, “আমরা মুজিববাদী সন্ত্রাস ও ফ্যাসিবাদ থেকে গোপালগঞ্জ ও পুরো বাংলাদেশকে মুক্ত করব।”

আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে নাহিদ বলেন, যুগের পর যুগ তারা গোপালগঞ্জের মানুষের জীবন বিপন্ন করেছে, মুক্তিযুদ্ধকে কলুষিত করেছে এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতি বৈষম্য করেছে। তিনি জানান, এনসিপি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল, কোনো সংঘর্ষ বা যুদ্ধের জন্য যায়নি। কিন্তু মুজিববাদী সন্ত্রাসীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে—যেমনটা জুলাই গণঅভ্যুত্থানেও হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সবসময় গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করতে চায় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের হাতে এত হত্যাকাণ্ডের পরও ৫ আগস্টের পর অনেকে ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ আনার চেষ্টা করেছে। অথচ আওয়ামী লীগ এখন আর কোনো রাজনৈতিক দল নয়, এটি সন্ত্রাসবাদী সংগঠনে রূপ নিয়েছে।

জুলাই গণহত্যার বিচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বহুবার আইনি ও বিচারিক প্রক্রিয়ায় বিচার চাওয়া হলেও ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের হামলাকারীদের ব্যাপকভাবে গ্রেপ্তার করা হয়নি। যাদের গ্রেপ্তার করা হয়, তারা কোর্ট থেকে জামিন নেয় বা থানা থেকে পালিয়ে যায়। প্রশাসনের ভেতরে দুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনো সক্রিয় এবং ঘুষের বিনিময়ে তাদের পক্ষ নেয়।

নাহিদ আরও বলেন, প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনী যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছে, সেই অনুযায়ী সকালের ঘটনার পরও তারা গোপালগঞ্জে প্রবেশের অনুমতি পেয়েছেন। পদযাত্রা নয়, শুধুমাত্র পথসভা করেছেন। কিন্তু পথে তাদের কর্মীদের বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসতে বাধা দেওয়া হয়, বাস আটকে দেওয়া হয়। এরপরও শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি শেষ করা হয়। কিন্তু ফেরার পথে সশস্ত্র আক্রমণ চালানো হয়। তিনি দাবি করেন, নিরাপত্তাবাহিনীর নির্দেশ অনুসরণ করেই তারা স্থান ত্যাগ করেছেন।

তিনি বলেন, চারজনের মৃত্যুর কথা শোনা গেছে, এবং বিএনপি কোনো বিচারবহির্ভূত হত্যাকে সমর্থন করে না। তিনি প্রত্যাশা করেন, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হবে এবং সন্ত্রাসীদের বিচারিক প্রক্রিয়ায় শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকারের ব্যর্থতা ও প্রশাসনের গাফিলতির কারণেই এই সহিংসতা হয়েছে, এবং তার দায়ভার তাদেরই নিতে হবে।

পোস্টের শেষে তিনি লেখেন, এনসিপি গোপালগঞ্জে যাওয়ার যে কমিটমেন্ট করেছিল, তা বাস্তবায়ন করেছে। এবং শহীদের রক্তের শপথ নিয়ে তিনি ঘোষণা দেন, মুজিববাদকে গোপালগঞ্জ কিংবা বাংলাদেশের মাটিতে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না।