গোপালগঞ্জে এনসিপির নেতাকর্মীরা সশস্ত্র হামলার শিকার, সেনাবাহিনী উদ্ধার করে এপিসিতে নিয়ে যায়

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাকর্মীরা দলীয় সমাবেশ করতে গিয়ে সশস্ত্র হামলার শিকার হন এবং কয়েক ঘণ্টা ধরে অবরুদ্ধ ছিলেন। আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, দক্ষিণাঞ্চল মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, উত্তরাঞ্চল মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমসহ কেন্দ্রীয় নেতারা দীর্ঘসময় ধরে আটকা পড়েন। পরে সেনাবাহিনীর একটি টিম এপিসিতে (বাহন) তাদের উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
দলের যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আরিফুর রহমান তুহিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে উদ্ধারকাজের বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি জানান, সেনাবাহিনী যখন নেতাদের উদ্ধার করতে আসে, তখন বাইরের পরিস্থিতি ছিল অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ। সেখানে গুলি ও ককটেল হামলা চলছিল। সেনারা কঠোর নির্দেশ পায় সকল নেতাকে মুখোমুখি করে এপিসিতে তুলে নেওয়ার। দীর্ঘ সময় আলোচনা ও ঝামেলার পর শেষ পর্যন্ত নেতাদের এপিসিতে তুলে নেওয়া হয়।
আরিফুর রহমান তুহিন আরও বলেন, উদ্ধারকালে নাহিদ ও হাসনাত দ্বিতীয়বার ধস্তাধস্তি করে এপিসিতে ওঠেন। বহর রওনা দেওয়ার পর হামলাকারীরা নেতাদের গাড়ি লক্ষ্য করে ককটেল, গুলি ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে অনেক গাড়ির কাঁচ ভেঙে যায় এবং বেশ কয়েকজন আহত হন, যার মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও রয়েছেন।
তিনি জানান, গোপালগঞ্জ শহর পেরোতেই নেতারা নিজ নিজ গাড়িতে ওঠেন। গুলি প্রায় থেমে গেলেও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ অব্যাহত ছিল। বহরের একটি গাড়িতে গুলি লাগে, চাকা পাংচার হয়ে যায় এবং দুইটি গাড়ি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রশাসনের ব্যাকআপ নিয়ে আর বেশি কিছু বলার নেই, তবে তিনি মনে করেন শুরুতেই প্রশাসনের মনোভাব নেতাদের জীবনের প্রতি যথাযথ ছিল না।
আরিফুর রহমান তুহিন বলেন, নেতাদের জন্য আমরা যে পরিমাণ সুরক্ষা দিয়েছি তা তাদের জীবনের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমাদের নেতারা সাধারণ গাড়ি ও সীমিত সিকিউরিটি ফোর্স নিয়ে চলাফেরা করেন, যেখানে সামান্য ইট পড়লেই কাঁচ ভেঙে যায়। সন্ত্রাসীদের মূল লক্ষ্য ছিল প্রধান নেতারা, বিশেষ করে নাহিদ, আখতার ও হাসনাত। তাই নেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য যা প্রয়োজন তাই করা হয়েছে।
তিনি শেষ করেন, “আপনারা যদি একটি সন্ত্রাসী বাহিনীর সামনে শুধু দাঁড়িয়ে থাকতেন, তাহলে হয়তো সবাই সেখানে প্রাণ হারাত। আমরা কিন্তু নেতাদের জীবন বাঁচাতে যা যা করতে হয়েছে, তা করেছি।”
আপনার মতামত লিখুন