গোপালগঞ্জে হামলার প্রতিবাদে এনসিপির দেশব্যাপী বিক্ষোভ, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর শান্তিপূর্ণ সমাবেশে হামলার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে দলটি। একই সঙ্গে এ ঘটনায় জড়িতদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। বুধবার রাত ১০টায় খুলনা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। গোপালগঞ্জে হামলার সময় তিনি নিজেও আক্রান্ত হন বলে জানিয়েছেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, গোপালগঞ্জ বর্তমানে একটি ফ্যাসিস্ট আশ্রয়কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে, যেখানে সারাদেশের ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে থাকা মামলার আসামিরা একত্রিত হচ্ছে এবং সেখান থেকেই সশস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের প্রোগ্রাম গোপালগঞ্জে চলবে না—এই মিথকে এনসিপি চ্যালেঞ্জ করেছে এবং ভেঙে দিয়েছে। কিন্তু এর জবাবে তাদের নেতাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে এবং কর্মীদের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, হামলার সঙ্গে জড়িত আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সন্ত্রাসী ও জঙ্গি আখ্যা দিয়ে দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় গোপালগঞ্জসহ সারাদেশের মানুষ নিরাপদ থাকবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। একইসঙ্গে তিনি জানান, এনসিপি ৩০ দিনে দেশের ৬৪ জেলায় যাবে—এই কর্মসূচি কোনোভাবেই ঠেকানো যাবে না। ফরিদপুরে পূর্বঘোষিত সভা ও পদযাত্রা কর্মসূচিও নির্ধারিত সময়েই অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, পহেলা জুলাই থেকে শুরু হওয়া ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে এনসিপি দেশজুড়ে স্থানীয় মানুষের সঙ্গে সরাসরি কথা বলছে এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে। গোপালগঞ্জেও সেই ধারাবাহিক কর্মসূচি চলছিল, কিন্তু মুজিববাদী সন্ত্রাসীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে হামলা চালায়।
হামলার বিস্তারিত তুলে ধরে তিনি বলেন, সমাবেশ শেষে মাদারীপুরের উদ্দেশে যাত্রা করার সময় তাদের গাড়িবহরে হামলা চালানো হয়। দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সরাসরি আক্রমণ চালানো হয়, এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সেনাসদস্যদেরও টার্গেট করা হয়। নিরাপত্তা বাহিনীর সহায়তায় তারা কোনোমতে খুলনায় পৌঁছান।
এই হামলার কারণে মাদারীপুর ও শরীয়তপুরে এনসিপির পথসভা স্থগিত করা হয়েছে বলে জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে হামলার প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করা সংগঠনগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক নাসীরউদ্দীন পাটওয়ারী, দক্ষিণাঞ্চল সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, উত্তরাঞ্চল সমন্বয়ক সারজিস আলম, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা এবং খুলনা মহানগর ও জেলা শাখার অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
আপনার মতামত লিখুন