একাত্তর ও গণতন্ত্রে কোনো ছাড় নেই: মির্জা ফখরুল

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: বুধবার, ২৩ জুলাই, ২০২৫, ৮:৪৪ অপরাহ্ণ
একাত্তর ও গণতন্ত্রে কোনো ছাড় নেই: মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় ঐক্য ও গণতন্ত্র প্রশ্নে কোনো ছাড় দেওয়ার কথা মানতে রাজি নন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “১৯৭১ হলো আমাদের মূল কথা। স্বাধীনতা যুদ্ধ আমাদের ভিত্তি, সেখানে কোনো কম্প্রোমাইজ নেই। আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি এবং সেটাই চাই।”

শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘গণ–অভ্যুত্থানের প্রত্যাশা ও দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি দিন দিন জটিল হচ্ছে। যারা গণতন্ত্র এবং জনগণের অগ্রগতিতে বিশ্বাস করে না, তারা ফ্যাসিস্ট শক্তিকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে। তিনি আশঙ্কা ব্যক্ত করেন, ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার জন্য ঐ ফ্যাসিস্ট শক্তির পুনর্গঠন ঘটছে।

দেশে বাড়তে থাকা মাদক ব্যবসা, হত্যা ও ছিনতাইয়ের ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “আমরা যদি সামনে আসা সুযোগ হারাই, তবে বাংলাদেশ বহু বছর পিছিয়ে যাবে। প্রতিবার নতুন অভ্যুত্থান হবে, জনগণ প্রাণ দিতে বাধ্য হবে, কিন্তু দায়িত্বহীনতার কারণে আমরা সুযোগ হারাবো—এটি ঠেকাতে হবে।”

তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ওপর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, “সংস্কার, সনদ এবং নির্বাচন—এই তিনটি বিষয়ের দিকে দ্রুত এগিয়ে যাওয়া জরুরি। এর দায়িত্ব বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের।”

আলোচনা সভায় গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, “গণতন্ত্রের জন্য ঐকমত্য প্রয়োজন। না হলে পতিত ফ্যাসিবাদ ও বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা পুরো প্রক্রিয়াটি ধ্বংস করে দিতে পারে। বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন অত্যাবশ্যক।”

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম বলেন, “গণ–অভ্যুত্থানের পর যে প্রত্যাশিত পরিবর্তন আশা করা হয়েছিল, তা হয়নি।”

এবি পার্টির চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, “গণ–অভ্যুত্থানে অংশ নেয়া ৯০ ভাগ মানুষের নাম কেউ জানে না। আমরা রাজনৈতিক স্বার্থে তাদের অবদান ছোট করছি। যদি শেখ হাসিনা পতিত না হতেন, আমাদের অবস্থা আরও কঠিন হতো।”

গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, “প্রশাসনের চরিত্রে কোনো পরিবর্তন হয়নি। বর্তমান সরকারের কাজের ওপর আমি ১০-এর মধ্যে ৪ নম্বর দিতাম।”

জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, “গণ–অভ্যুত্থানের প্রত্যাশা ছিল বিভেদের রাজনীতি থেকে মুক্ত একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের। বিচার কাঠামোতে গুম-খুনের বিচারের ব্যবস্থা এখনও দেখা যাচ্ছে না। নির্বাচনের মাঠে নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”

আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন গণতন্ত্র মঞ্চের প্রধান সমন্বয়ক রফিকুল ইসলাম বাবলু। সভায় আরও বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ১২-দলীয় জোট প্রধান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদ উল্লাহ কায়সার, জেএসডির সহসভাপতি তানিয়া রব, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের আহ্বায়ক নাঈম জাহাঙ্গীর, নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত প্রমুখ।