বাংলাদেশে জাতিসংঘ মানবাধিকার মিশনের কার্যক্রম শুরু, সরকারের জবাবদিহির অঙ্গীকার

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: বুধবার, ২৩ জুলাই, ২০২৫, ৯:৪৬ অপরাহ্ণ
বাংলাদেশে জাতিসংঘ মানবাধিকার মিশনের কার্যক্রম শুরু, সরকারের জবাবদিহির অঙ্গীকার

বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের (ওএইচসিএইচআর) মিশন কার্যক্রম শুরু করেছে। এ লক্ষ্যে জাতিসংঘের সঙ্গে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে তিন বছরের একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকে উদ্বেগের প্রকাশ ঘটলেও সরকার আশ্বস্ত করেছে, দেশের প্রচলিত আইন, সামাজিক রীতিনীতি ও সাংস্কৃতিক কাঠামোর বাইরে কোনো এজেন্ডা এই মিশনের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে না।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ওএইচসিএইচআরের এই মিশনের মূল লক্ষ্য হলো বাংলাদেশে মানবাধিকার উন্নয়ন ও সুরক্ষায় সহায়তা দেওয়া। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তা প্রদান, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংক্রান্ত দায়বদ্ধতা পূরণে সক্ষমতা বৃদ্ধি, আইনি সহায়তা এবং প্রাতিষ্ঠানিক শক্তিশালীকরণই এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের সংস্কার ও জবাবদিহির অঙ্গীকারের অংশ হিসেবেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকারের ভাষ্যমতে, বাংলাদেশে কিছু গোষ্ঠী জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাগুলোর আদর্শিক অবস্থান নিয়ে উদ্বিগ্ন হলেও সরকার নিশ্চিত করছে, এই মিশন কোনো সামাজিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য ব্যবহৃত হবে না।

সরকার বলেছে, বাংলাদেশ একটি সংস্কৃতিমূল্য ও ধর্মীয় বিশ্বাসভিত্তিক সমাজ। তাই যে কোনো আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব দেশের মূল্যবোধকে সম্মান জানিয়ে পরিচালিত হতে হবে। ওএইচসিএইচআর মিশন কেবল গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা প্রতিরোধ, নথিভুক্তকরণ এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করবে। জাতিসংঘও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, তারা বাংলাদেশের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বাস্তবতা পুরোপুরি সম্মান করে কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

এছাড়া, সরকারের পূর্ণ সার্বভৌম অধিকার থাকবে চুক্তি থেকে সরে আসার, যদি মনে করে এই অংশীদারত্ব দেশের স্বার্থের সঙ্গে আর সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, যদি এই ধরনের একটি অফিস আগের সরকারগুলোর আমলে থাকত, তবে বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গণহত্যার মতো অপরাধগুলো তদন্ত, নথিভুক্ত এবং বিচারপ্রাপ্ত হতো।

সরকার এই অংশীদারত্বকে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করা ও নাগরিকদের নিরাপত্তা বৃদ্ধির একটি সুযোগ হিসেবে দেখছে। এটি বাংলাদেশের আইন, মূল্যবোধ এবং জনগণের প্রতি জবাবদিহির ভিত্তিতে পরিচালিত হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।