ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিকায়নে অনুমোদিত ২৮৪০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প

সরকার ঢাকার বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের জন্য প্রায় ২৮৪০ কোটি টাকার একটি বিশাল প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় ২০২৫ সালের জুলাই থেকে ২০৩০ সালের জুন পর্যন্ত ধাপে ধাপে কাজগুলো সম্পন্ন হবে।
প্রকল্পের মূল কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে মোট ৪১টি বহুতল ভবন নির্মাণ, যার মধ্যে থাকবে ১৬টি নতুন আবাসিক হল, ৮টি নতুন একাডেমিক ভবন, ৯টি হাউজ টিউটর আবাসিক ভবন, ১২ তলা বিশিষ্ট মাল্টিপারপাস ডাকসু ভবন, ২০ তলা ও ৪ তলা বিশিষ্ট প্রশাসনিক ভবন, ৬ তলা মেডিক্যাল সেন্টার, আধুনিক গ্যালারি, ডরমিটরি ও খেলার মাঠ উন্নয়ন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ৮টি নতুন একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হবে, যার মধ্যে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পশ্চিম ও উত্তরে পুরাতন ভবন ভেঙে একটি ১২ তলা ও একটি ৬ তলা ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া বিজ্ঞান, উদ্ভিদবিজ্ঞান, চারুকলা, বিজনেস স্টাডিজ, প্রেস বিল্ডিং ও নীলক্ষেত পুলিশের টিনশেড ফাঁড়ি ভেঙে বিভিন্ন উচ্চতাসম্পন্ন একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হবে।
শিক্ষার্থীদের আবাসিক সংকট মেটাতে ১০টি নতুন আবাসিক ভবন গড়ে তোলা হবে। পুরাতন টিনশেড ভবন ভেঙে শহিদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের জায়গায় ১,৩০০ শিক্ষার্থীর জন্য দুটি ভবন নির্মাণ হবে। এছাড়াও মাস্টার দা সূর্যসেন, ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, হাজী মুহম্মদ মুহসীন ও ড. কুদরাত-ই-খুদা হোস্টেলসহ বিভিন্ন হলের পুরাতন ভবন ভেঙে উচ্চতাসম্পন্ন নতুন ভবন তৈরি করা হবে। প্রতিটি আবাসিক হলে শিক্ষকদের জন্য পৃথক ২০টি ফ্ল্যাটসহ ১১ তলা বিশিষ্ট শিক্ষক কোয়ার্টারও নির্মাণ করা হবে।
ছাত্রীদের জন্য ৬টি নতুন আবাসিক হল তৈরি হবে। শাহনেওয়াজ, শামসুন নাহার, লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের বিভিন্ন পুরাতন ভবন ভেঙে আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।
শিক্ষকদের আবাসনের জন্য আলাদা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যেখানে মাস্টার দা সূর্যসেন ও হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের প্রভোস্ট বাংলো ভেঙে নতুন বাংলো নির্মাণ এবং দক্ষিণ ফুলার রোড এলাকায় ১৫ তলা বিশিষ্ট ১১২ ফ্ল্যাটের আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হবে।
ডাকসু ভবন ভেঙে মাল্টিপারপাস ১২ তলা ভবন, প্রশাসনিক ভবনের উত্তর-পশ্চিম অংশ ভেঙে ২০ তলা ও দক্ষিণ-পূর্ব অংশ ভেঙে ৪ তলা ভবন নির্মাণ করা হবে। জিমনেসিয়ামের জন্য প্রি-ইঞ্জিনিয়ারড ভবনের বাকি কাজও সম্পন্ন করা হবে।
কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে আধুনিক ক্রীড়া সুবিধার জন্য গ্যালারি, বাস পার্কিং, পরিচালকের অফিস ও খেলোয়াড়দের ডরমিটরি নির্মাণ করা হবে। এছাড়া শিববাড়ী আবাসিক এলাকার পুরাতন ভবন ভেঙে শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা মেডিক্যাল সেন্টার ও মসজিদুল জামিয়া কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জলাধার সংস্কার, সৌন্দর্যবর্ধন, রোড নেটওয়ার্ক ও সার্ভিস লাইন স্থাপন, প্রায় ২৪,৮২০ মিটার ড্রেনেজ সিস্টেম নির্মাণ এবং আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গ্রহণের কাজগুলোও প্রকল্পের অংশ। কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ ও জগন্নাথ হলে পাবলিক টয়লেটও বসানো হবে।
এভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় একটি আধুনিক ও স্থায়ী অবকাঠামো তৈরির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন