থাইল্যান্ড ও কাম্বোডিয়ার সীমান্ত সংঘর্ষে প্রাণহানি ও উত্তেজনা বৃদ্ধি

সীমান্ত বিরোধের কারণে থাইল্যান্ড ও কাম্বোডিয়ার মধ্যে এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। টানা দ্বিতীয় দিনের গোলাগুলিতে অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছে। সংঘর্ষ থামার কোনো চিহ্ন না পাওয়ায় আন্তর্জাতিক মহল উদ্বিগ্ন।
থাই সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, কাম্বোডিয়ান সেনারা রুশ উৎপাদিত বিএম-২১ রকেট লঞ্চার এবং ভারী কামান ব্যবহার করেছে। গোলাগুলির ফলে প্রায় এক লাখ মানুষ নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। দুই দেশই একে অপরকে সংঘর্ষের জন্য দায়ী করছে। এই বিরোধ শতবর্ষ পুরানো এবং সার্বভৌমত্ব নিয়ে কেন্দ্র করে।
সুরিন প্রদেশ থেকে সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, আজও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে এবং রাজপথজুড়ে থাই সেনাদের উপস্থিতি দৃশ্যমান। একই সঙ্গে থাই সামরিক কনভয় সীমান্তে গমন করেছে।
গত বুধবার রাতে থাইল্যান্ড তাদের রাষ্ট্রদূতকে নমপেন থেকে প্রত্যাহার এবং কাম্বোডিয়ার দূতকে বহিষ্কার করেছিল। পরদিন সংঘর্ষ শুরু হয়। থাইল্যান্ড দাবি করেছে, তাদের এক সেনা ভূমিমাইন বিস্ফোরণে পা হারিয়েছে, যা তারা কাম্বোডিয়ার সেনাবাহিনীকে দায়ী করেছে।
থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, এখন পর্যন্ত ১৫ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ১৪ জন সাধারণ মানুষ। আহত ৪৬ জন, যার মধ্যে ১৫ জন সেনা। কাম্বোডিয়ার পক্ষ থেকে হতাহতের তথ্য প্রকাশ না করলেও এক বেসামরিক নিহত এবং পাঁচ আহতের খবর পাওয়া গেছে। প্রায় ১,৫০০ পরিবার নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
গতকাল থাইল্যান্ড ৬টি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান প্রস্তুত রাখে এবং একটি বিমান কাম্বোডিয়ার সামরিক স্থাপনে হামলা চালায়, যা কাম্বোডিয়া বেপরোয়া সামরিক আগ্রাসন হিসেবে উল্লেখ করেছে। আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা আইআইএসএস বলেছে, থাইল্যান্ডের সামরিক ক্ষমতা অনেক বেশি, আর কাম্বোডিয়ার কোনো যুদ্ধবিমান নেই।
যুক্তরাষ্ট্র দ্রুত সংঘাত বন্ধ, সাধারণ মানুষের সুরক্ষা এবং শান্তিপূর্ণ সমাধানে আহ্বান জানিয়েছে। আসিয়ানের সভাপতি মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমও দুই দেশের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান করেছেন এবং মালয়েশিয়া শান্তিপূর্ণ সমাধানে সহযোগিতার প্রস্তুতি প্রকাশ করেছে।
আপনার মতামত লিখুন