১১ দিনের বিশেষ সতর্কতা: নৈরাজ্য ঠেকাতে দেশজুড়ে তল্লাশি ও নজরদারি জোরদার

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: শুক্রবার, ১ আগস্ট, ২০২৫, ৮:০৯ অপরাহ্ণ
১১ দিনের বিশেষ সতর্কতা: নৈরাজ্য ঠেকাতে দেশজুড়ে তল্লাশি ও নজরদারি জোরদার

আসন্ন আগস্টকে ঘিরে সম্ভাব্য অস্থিতিশীল পরিস্থিতির আশঙ্কায় ১১ দিনের বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) জানিয়েছে, ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত সময়কে ঘিরে অনলাইন ও অফলাইনে সংঘবদ্ধ প্রচারণার মাধ্যমে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা হতে পারে। এই প্রেক্ষাপটে সারাদেশে সতর্কতা অবলম্বনের পাশাপাশি নজরদারি ও তল্লাশি কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে।

এসবির পাঠানো বিশেষ বার্তায় বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকলেও দলটির নেতাকর্মীরা দেশ-বিদেশে ছদ্মবেশে তৎপর রয়েছেন। তারা গোপনে একত্র হয়ে সহিংসতা বা হামলার পরিকল্পনা করতে পারেন—এমন আশঙ্কা থেকে এই সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধারণা, এই সময়ে আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনায় হামলা, বিশৃঙ্খলা কিংবা ভাঙচুর চালাতে পারে।

এই প্রেক্ষাপটে সোমবার (২৮ জুলাই) এসবি থেকে একটি বিশেষ বার্তা পাঠানো হয়েছে ডিএমপি কমিশনার, সিটি এসবি, বিভাগীয় উপ-পুলিশ কমিশনার, চট্টগ্রাম ও খুলনার স্পেশাল পুলিশ সুপারসহ দেশের সব জেলা পুলিশ সুপারদের কাছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, ঐতিহাসিক জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিকে ঘিরে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দল ও ফ্যাসিবাদবিরোধী সামাজিক সংগঠনগুলো পয়লা জুলাই থেকে নানা কর্মসূচি পালন করছে। এর ধারাবাহিকতায় ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত সময়কে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

এসবির ভাষ্য অনুযায়ী, এই সময়ে ফ্যাসিবাদী শক্তিগুলো দেশব্যাপী উসকানিমূলক প্রচারণা চালাতে পারে, যা অনলাইন এবং অফলাইন—উভয় মাধ্যমেই সংঘটিত হতে পারে। সেইসঙ্গে ফ্যাসিবাদবিরোধী কর্মসূচিতে বাধা দিয়ে বা উসকানি সৃষ্টি করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর চেষ্টাও হতে পারে। ফলে দেশের সব ইউনিটকে নিজ নিজ এলাকায় রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এই সময়ের জন্য নির্দিষ্টভাবে যেসব পদক্ষেপের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও যানবাহনের ওপর নজরদারি, সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদার, সাইবার গোয়েন্দা কার্যক্রম বৃদ্ধি, গ্রেফতারি পরোয়ানা তামিল এবং মোবাইল পেট্রল ও সাইবার পেট্রলিং জোরদার করা। বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাট, রেলস্টেশন ও বিমানবন্দরের আশপাশে তল্লাশিও বাড়ানো হয়েছে।

পুলিশ কর্মকর্তাদের মতে, আওয়ামী লীগের কিছু যুব ও ছাত্রসংগঠনের নেতারা মাঠপর্যায়ে দৃশ্যমান না থাকলেও অনলাইনে ‘ভার্চুয়াল স্কোয়াড’ গঠন করেছেন। এই ভার্চুয়াল টিম ফেসবুক, টেলিগ্রাম ও ইউটিউবভিত্তিক চ্যানেল ব্যবহার করে সামাজিক অস্থিরতা ছড়ানোর কাজ করছে।

এসব বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী গণমাধ্যমে বলেন, আওয়ামী লীগের দোসররা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। তাদের কঠোর হাতে দমন করা হবে। যারা দেশে বা বিদেশে বসে অশান্তি সৃষ্টির পরিকল্পনায় লিপ্ত, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।