রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: তৃতীয় বছরে গোপন ড্রোন অভিযান ও সীমিত যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা

রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার সংঘাত তৃতীয় বছরে গড়িয়েছে, যার ফলে দুই দেশই চরম সামরিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। সম্প্রতি ইউক্রেন ‘স্পাইডারওয়েব’ নামে একটি গোপন ড্রোন অভিযানের মাধ্যমে রাশিয়ার চারটি বিমানঘাঁটিতে আঘাত হানে। এতে ৪০টিরও বেশি সামরিক বিমান ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং অনুমান করা হচ্ছে, রাশিয়ার প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে।
এই হামলার পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়া ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক আক্রমণ চালিয়েছে। ৪৭৯টিরও বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ফলে কমপক্ষে ১২ জন ইউক্রেনীয় সেনা নিহত এবং ৬০ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে।
তবে এই উত্তেজনার মধ্যেই শান্তির সম্ভাবনার আভাস মিলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। দুই নেতা একটি ৩০ দিনের সীমিত যুদ্ধবিরতির বিষয়ে একমত হয়েছেন। এই সময়ে রাশিয়া ইউক্রেনের জ্বালানি ও অবকাঠামো লক্ষ্যবস্তুতে হামলা থেকে বিরত থাকবে।
যদিও পুতিন কিছু শর্ত দিয়েছেন, যেমন ইউক্রেনের প্রতি পশ্চিমা সামরিক সহায়তা বন্ধ করতে হবে এবং ইউক্রেন যেন যুদ্ধবিরতির সুযোগে তাদের সেনাবাহিনী পুনর্গঠন না করে। পুতিন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, ইউক্রেন এই সময়কে সামরিকভাবে শক্তিশালী হয়ে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যবহার করতে পারে।
আলোচনায় ইউরোপীয় শান্তিরক্ষী বাহিনী ইউক্রেনে মোতায়েন করার বিষয়টিও উঠে এসেছে, যেখানে পুতিন সম্মতি জানিয়েছেন। এই পদক্ষেপ যুদ্ধ থামিয়ে একটি দীর্ঘমেয়াদি শান্তির ভিত্তি তৈরি করতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন।
তবে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব এবং পুতিনের শর্তাবলির মধ্যে সমন্বয় কতটা সম্ভব হবে তা এখনও অনিশ্চিত। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চোখ এখন ট্রাম্প ও পুতিনের পরবর্তী সিদ্ধান্তের দিকে, যা ভবিষ্যতে এই যুদ্ধের গতিপথ নির্ধারণ করবে।
আপনার মতামত লিখুন