দুর্ভোগের নাম যশোর-খুলনা মহাসড়ক

বৃষ্টি হলে কাদা, রোদে উড়ছে ধুলোর ঝড়—এ যেন যশোর-খুলনা মহাসড়কের প্রতিদিনের দৃশ্য। নামেমাত্র পাকা এই মহাসড়কে অসংখ্য গর্তে জমে থাকা পানি আর ট্রাক-ট্রলির মাটি-বালির কারণে রাস্তা পরিণত হয়েছে এক দুর্গম কাদায়। এতে যাতায়াতে যেমন ভোগান্তি বেড়েছে, তেমনি বাড়ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও।
অভয়নগর উপজেলার বিভিন্ন অংশে মহাসড়কের এই করুণ অবস্থা এখন নিত্যদিনের চিত্র। প্রতিদিন হাজারো শিক্ষার্থী, কর্মজীবী মানুষ এবং চালকরা বিপাকে পড়ছেন। স্থানীয় একজন মোটরসাইকেলচালক কৃষ্ণপদ শীল জানান, বৃষ্টিতে কাদার জন্য চলা যায় না, আবার রোদে ধুলায় চোখে কিছু দেখা যায় না। দুই দিন আগে এক বন্ধুসহ মোটরসাইকেল থেকে পড়ে আহত হয়েছেন বলেও জানান তিনি।
খুলনা থেকে রাজবাড়ী রুটে চলাচলকারী এ্যানি পরিবহনের চালক রমজান আলী বলেন, এই রাস্তায় সারা বছরই দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বর্ষাকালে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে। ধুলায় শ্বাস নেওয়াই কঠিন হয়ে পড়ে, আর বর্ষায় ভয়াবহ কাদা রাস্তাকে করে তোলে দুর্ঘটনার ফাঁদ। তিনি দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, মহাসড়ক ঘেঁষা ইটভাটা ও বালু ব্যবসায়ীরা লাইসেন্সবিহীন ট্রলি, ট্রাক্টর ও ডাম্পার দিয়ে প্রতিনিয়ত মাটি ও বালি পরিবহন করেন। এসব যানবাহন থেকে মাটি-বালি পড়ে রাস্তার গর্তগুলো আরও ভরাট হয়ে বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। এতে রাস্তার পাকা অংশ কার্যত বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
সড়কের পাশে থাকা দোকানদাররা জানান, মহাসড়কের এই বেহাল অবস্থার কারণে ব্যবসায় চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা। বৃষ্টির সময় দোকানে কাদা ঢুকে পড়ে, আর রোদে পণ্যের ওপর জমে ধুলোর স্তর। ফুটপাত দিয়ে হাঁটাও দুঃসাধ্য হয়ে গেছে।
নওয়াপাড়া হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মাহবুবুর রহমান জানান, জেলা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ যৌথভাবে কাজ করছে এবং অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে। মহাসড়কে দুর্ঘটনা কমাতে আইনি ব্যবস্থা অব্যাহত রয়েছে।
তবে এলাকাবাসীর দাবি, এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান ছাড়া যশোর-খুলনা মহাসড়ক আরও ভয়াবহ রূপ নেবে। তারা দ্রুত ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, সড়কের পূর্ণাঙ্গ সংস্কার এবং অবৈধ যান চলাচলের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ দাবি করছেন।
আপনার মতামত লিখুন