ময়মনসিংহ মেডিক্যালে প্রতারকের হাতে রোগীর সেলাই, হাতেনাতে আটক

ঈদের ছুটির রাতে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ঘটে যায় চাঞ্চল্যকর এক প্রতারণার ঘটনা। চিকিৎসক অনুপস্থিত থাকার সুযোগে আলমগীর হোসেন নামের এক প্রতারক ওয়ার্ডবয়ের ছদ্মবেশে এক রোগীর হাতে সেলাই ও ড্রেসিং করে দেন।
ঘটনাটি ঘটে শনিবার রাত সোয়া ৮টার দিকে। গাজীপুর থেকে আসা আহত রোগী সোহেল মিয়ার আঙুলে সেলাই করার সময় হাসপাতাল কর্মীদের সন্দেহ হলে আলমগীরকে আটক করা হয়। তার পরনে ছিল সাধারণ ওয়ার্ডবয়ের পোশাক, হাতে ছিল না গ্লাভস বা চিকিৎসার কোনো প্রাসঙ্গিক সরঞ্জাম।
হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. মাইনুদ্দীন খান বলেন, “এই ঘটনার তদন্ত চলছে। কীভাবে একজন প্রতারক হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটে কাজ করছিল, তা যাচাই করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রতারক আলমগীরকে পুলিশে সোপর্দ করে। ওয়ার্ড মাস্টার জীবন চন্দ্র বাদী হয়ে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে অভিযুক্ত আলমগীরকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন জানান, আলমগীর দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে ওয়ার্ডবয় পরিচয়ে হাসপাতালে প্রবেশ করে ড্রেসিংরুমে কাজ করতেন। তার বিরুদ্ধে প্রতারণাসহ সংশ্লিষ্ট ধারায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনায় হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও চিকিৎসা সেবার নজরদারিতে বড় ধরনের গাফিলতি প্রকাশ পেয়েছে। ঈদের ছুটিতে চিকিৎসক না থাকায় এমন প্রতারককেই ভরসা করতে হয়েছে রোগীকে—এমন ঘটনাকে ‘গুরুতর অশনিসংকেত’ হিসেবে দেখছেন সাধারণ মানুষ ও সংশ্লিষ্টরা।
এখনো পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তদন্ত প্রতিবেদন শেষে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন