বিমানবন্দরে নতুন যাত্রী তথ্য ব্যবস্থায় স্বার্থের সংঘাতের অভিযোগ, তদন্ত দাবি ট্রান্সপারেন্সির

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: রবিবার, ২৯ জুন, ২০২৫, ৮:৪৩ অপরাহ্ণ
বিমানবন্দরে নতুন যাত্রী তথ্য ব্যবস্থায় স্বার্থের সংঘাতের অভিযোগ, তদন্ত দাবি ট্রান্সপারেন্সির

বাংলাদেশের বিমানবন্দরগুলোকে আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ করতে নতুন যাত্রী তথ্য ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তবে এই উদ্যোগ ঘিরে স্বার্থের সংঘাত ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। কারণ, যাত্রী তথ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্প পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত একটি কোম্পানির ৩৪ শতাংশ মালিকানা রয়েছে বাংলাদেশে নিযুক্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ আলি আল হামুদির।

শনিবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই এ নিয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে বাস্তবায়নাধীন নতুন যাত্রী তথ্য ব্যবস্থার একটি সাব-কন্ট্রাক্ট পেয়েছে আমিরাত সরকারের মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠান। আর সেই সাব-কন্ট্রাক্ট পেয়েছে যে কোম্পানি, তাতে অংশীদার রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ আলি আল হামুদি নিজেই।

এই চুক্তি স্বচ্ছতা এবং স্বার্থের সংঘাত প্রশ্নে উদ্বেগ তুলেছে মিডল ইস্ট আই। তারা জানতে চেয়েছে, এই প্রকল্পে বাংলাদেশ সরকার কোনো আর্থিক মূল্য পরিশোধ করছে কিনা, অথবা যাত্রীরা নতুন এই ব্যবস্থার কারণে বাড়তি খরচের মুখে পড়ছেন কিনা।

এছাড়া রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ আলি আল হামুদির ব্যবসায়িক সম্পৃক্ততা সরকারের অনুমোদিত কি না, কিংবা তার বিনিয়োগের অর্থের উৎস কী—এসব নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে সংবাদমাধ্যমটি।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এ বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “একজন সরকারি কর্মচারী হিসেবে, সরকারের অনুমোদন ছাড়া কোনো ব্যবসায়িক কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হওয়া আইনত ও নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। এটি স্পষ্টতই স্বার্থের সংঘাত ও ক্ষমতার অপব্যবহারের উদাহরণ।”

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আমিরাতের রাষ্ট্রদূত, ঢাকার আমিরাত দূতাবাস, আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর সঙ্গে মিডল ইস্ট আই যোগাযোগ করলেও তারা কেউই কোনো মন্তব্য দেয়নি।

এছাড়া বাংলাদেশি কর্মকর্তারাও চুক্তি সম্পর্কে মন্তব্য করতে রাজি হননি, কারণ এতে বাংলাদেশ ও আমিরাতের কূটনৈতিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে তারা মনে করছেন।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারের মধ্যে এডভান্স প্যাসেঞ্জার ইনফরমেশন (API) এবং প্যাসেঞ্জার নেইম রেকর্ড (PNR) তথ্য ব্যবস্থাপনা স্থাপনে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। সেই উদ্যোগের আওতায়ই এই নতুন প্রযুক্তি বাস্তবায়নাধীন।