ইমামদের সংগঠিত করে সমাজ পরিবর্তনের আহ্বান ধর্ম উপদেষ্টার

ইমামদের সমাজ পরিবর্তনের অগ্রদূত হিসেবে উল্লেখ করে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, “ইমামগণ সমাজে অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তি। নৈতিকতা ও আদর্শিক মূল্যবোধের বিকাশে তাঁদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। জনগণের সঙ্গে তাঁদের সরাসরি সংযোগ থাকায় তাঁদের সংগঠিত করতে পারলে সমাজ পরিবর্তনের ধারা এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।”
রোববার (২৯ জুন) দুপুর ২টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘জাতীয় হিফজুল কোরআন ও সীরাত প্রতিযোগিতা এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমামদের জাতীয় সম্মেলন ২০২৫’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি জানান, ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত মোট ৬৩ হাজার ১৯৭ জন ইমাম ও মুয়াজ্জিনকে সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ ও অনুদান হিসেবে ৩৭ কোটি ৯২ লাখ ৭৩ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৭ কোটি টাকা ঋণ এবং ২০ কোটি ৯১ লাখ টাকা ছিল অফেরতযোগ্য অনুদান। শুধু ২০২৪-২৫ অর্থবছরেই বিতরণ করা হয়েছে ৪ কোটি ১১ লাখ টাকা।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, “ইসলামের অপব্যাখ্যা রোধ করে সঠিক ব্যাখ্যা তুলে ধরা, সমাজে শান্তি, সম্প্রীতি ও সহনশীলতা প্রতিষ্ঠা করাই সময়ের দাবি। আমরা চাই—মসজিদ হবে জ্ঞানের কেন্দ্র, আর ইমাম হবেন নেতৃত্বের দিশারি।”
তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক হিফজ ও ক্বিরাত প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের প্রতিযোগীদের অর্জন জাতির গর্ব। “এই অর্জন প্রমাণ করে আমাদের সন্তানেরা কোরআনের আলোয় আলোকিত। এখন দরকার সেই আলোকে সমাজে ছড়িয়ে দেওয়া, যেখানে ইমামদের প্রশিক্ষণ ও অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ধর্ম সচিব একেএম আফতাব হোসেন প্রামাণিক এবং সভাপতিত্ব করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ও সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আ. ছালাম খান।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নরস-এর সদস্য মাওলানা সৈয়দ মোহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হক, ড. খলিলুর রহমান মাদানী, ধর্ম মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা, ওলামায়ে কেরাম এবং প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীরা।
অনুষ্ঠান শেষে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন বাইতুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি আবদুল মালেক।
সম্মেলনে হিফজুল কোরআন ও সীরাত প্রতিযোগিতায় জাতীয় পর্যায়ে তিনটি গ্রুপে ৯ জন করে মোট ২৭ জন বিজয়ী এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমামদের মধ্যে নগদ অর্থ, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।
জাতীয় পর্যায়ে ৩ জন শ্রেষ্ঠ ইমাম, বিভাগীয় পর্যায়ে ২৪ জন, জেলা পর্যায়ে ১৯২ জন এবং ৬৪ জন শ্রেষ্ঠ খামারী ইমামকেও সম্মাননা দেওয়া হয়।
হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কার ছিল ২ লক্ষ টাকা, দ্বিতীয় ১.৫ লক্ষ এবং তৃতীয় পুরস্কার ১ লক্ষ টাকা। সীরাত প্রতিযোগিতায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কার ছিল যথাক্রমে ৫০ হাজার, ৪৫ হাজার এবং ৪০ হাজার টাকা। শ্রেষ্ঠ ইমাম ও খামারী ইমামদের ক্ষেত্রেও যথানিয়মে নগদ অর্থ, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।
আপনার মতামত লিখুন