দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন আঞ্চলিক জোট গঠনের উদ্যোগে চীন-পাকিস্তান-বাংলাদেশ

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: সোমবার, ৩০ জুন, ২০২৫, ১১:৩৬ পূর্বাহ্ণ
দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন আঞ্চলিক জোট গঠনের উদ্যোগে চীন-পাকিস্তান-বাংলাদেশ

দক্ষিণ এশিয়ায় একটি নতুন আঞ্চলিক জোট গঠনের পরিকল্পনায় যৌথভাবে কাজ করছে চীন ও পাকিস্তান। এ উদ্যোগের অন্যতম অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশও এতে যুক্ত রয়েছে। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন–এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, দক্ষিণ এশিয়ায় সংহতি গড়ে তোলার লক্ষ্যে চীন ও পাকিস্তান কয়েক মাস ধরে এই সম্ভাব্য জোট নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে এবং এ প্রক্রিয়ায় ইতোমধ্যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।

এই আলোচনার অংশ হিসেবেই সম্প্রতি চীনের কুনমিং শহরে চীন, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ১৯ জুনের ওই বৈঠকে তিন দেশের শীর্ষ কূটনীতিকরা অংশ নেন, যা এই তিন দেশের মধ্যে প্রথমবারের মতো এমন ধরনের উচ্চপর্যায়ের বৈঠক। বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য ছিল দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোকেও নতুন এই আঞ্চলিক কাঠামোয় অন্তর্ভুক্ত করা এবং সার্কের কার্যকারিতা হ্রাস পাওয়ার প্রেক্ষাপটে একটি বিকল্প সহযোগিতা প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা।

সূত্রগুলো জানিয়েছে, ভারতকেও এই জোটে আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে, তবে দিল্লির বর্তমান কূটনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও আঞ্চলিক স্বার্থ ভিন্ন হওয়ায় তারা এতে সাড়া দেবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। অন্যদিকে, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, আফগানিস্তানসহ সার্কভুক্ত অন্যান্য দেশগুলোর এই নতুন গোষ্ঠীতে যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রস্তাবিত এই জোটের মূল লক্ষ্য হবে দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ, অবকাঠামো সংযোগ বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব জোরদার করা। একইসঙ্গে, যেসব দেশের মধ্যে মতাদর্শগত মিল রয়েছে, তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা গড়ে তোলাও এই উদ্যোগের অন্যতম উদ্দেশ্য।

উল্লেখ্য, এক সময় সার্ক দক্ষিণ এশিয়ার ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন’ হিসেবে বিবেচিত হলেও ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্ব এবং রাজনৈতিক জটিলতার কারণে সংগঠনটি কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়ে। সর্বশেষ সার্ক সম্মেলন হয়েছিল এক দশক আগে। ২০১৬ সালে ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলন ভারত বয়কট করে এবং বাংলাদেশও অংশ নেয়নি। এরপর থেকে সার্ক কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। সম্প্রতি কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত সার্কভুক্ত পাকিস্তানি ব্যবসায়ীদের জন্য দেওয়া বিশেষ ভিসা সুবিধাও বাতিল করে দেয়, যা সার্কের ভবিষ্যৎকে আরও অনিশ্চিত করে তোলে।

এই প্রেক্ষাপটেই চীন ও পাকিস্তান আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একমত দেশগুলোর সঙ্গে নতুন একটি কার্যকর জোট গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।