প্রধান বিচারপতি ও জরুরি অবস্থার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্যে অগ্রগতি

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই, ২০২৫, ১০:৩১ অপরাহ্ণ
প্রধান বিচারপতি ও জরুরি অবস্থার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্যে অগ্রগতি

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, প্রধান বিচারপতি নিয়োগ এবং জরুরি অবস্থা ঘোষণাসহ একাধিক বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ও আংশিক ঐকমত্য অর্জিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের ১১তম দিনের আলোচনা শেষে তিনি এ তথ্য জানান।

অধ্যাপক রীয়াজ জানান, প্রধান বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত দুটি বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে। প্রথমত, সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদের বিদ্যমান ব্যবস্থা পরিবর্তন এবং দ্বিতীয়ত, রাষ্ট্রপতি যেন আপিল বিভাগের বিচারপতিদের মধ্য থেকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করেন। যদিও জ্যেষ্ঠতম বিচারপতির নিয়োগ নিয়ে দুটি ভিন্নমত রয়েছে—একটি পক্ষ কেবল সর্বোচ্চ জ্যেষ্ঠ বিচারপতির পক্ষে, অন্যপক্ষ জ্যেষ্ঠ দুইজনের মধ্য থেকে একজনকে বেছে নেওয়ার পক্ষে। এ বিষয়ে আরও আলোচনার জন্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোকে সুনির্দিষ্ট মতামত দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়েও আলোচনা হয়েছে। কমিশন প্রস্তাব করেছে, তত্ত্বাবধায়ক প্রধানকে আইনসভার মধ্য থেকে নিয়োগের ব্যবস্থা রাখা হোক। এই বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো মতামত প্রদান করেছে এবং সেই ভিত্তিতে আরও সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব টেবিলে রয়েছে। সব রাজনৈতিক দলই একটি গ্রহণযোগ্য ও নির্ভরযোগ্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চায়, যা ভবিষ্যতে বিতর্কের জন্ম না দেয় এবং অতীতের আন্দোলনের প্রতিফলন ঘটে।

জরুরি অবস্থা ঘোষণার বিষয়েও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দুটি বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। তারা মনে করছে, সংবিধানের ১৪১ অনুচ্ছেদে জরুরি অবস্থার যে বিধান রয়েছে তা সংশোধন জরুরি, যেন এটি রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার না হয়। বিশেষ করে ‘অভ্যন্তরীণ গোলযোগ’ শব্দটি বাদ দেওয়ার বিষয়ে দলগুলোর একমত রয়েছে। একই সঙ্গে, কী ধরনের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা যাবে, সেই বিষয়েও সুস্পষ্টতা আনার প্রস্তাব এসেছে। কেউ কেউ সংসদীয় কমিটির মাধ্যমে কিংবা মন্ত্রিসভার অনুমতির শর্তে জরুরি অবস্থার ঘোষণা দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছে।

সবশেষে আলী রীয়াজ বলেন, ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা ধীরে হলেও ইতিবাচকভাবে এগোচ্ছে। প্রতিদিনই নতুন অগ্রগতি হচ্ছে এবং রাজনৈতিক দলগুলো আন্তরিকভাবে একে অপরের মতামত শ্রদ্ধার সঙ্গে বিবেচনা করছে। আশাবাদী, এই মাসের মধ্যেই একটি সম্মিলিত সনদ প্রণয়ন সম্ভব হবে।